ঈদের পর লকডাউনের সময় গার্মেন্টস খোলা রাখার দাবি জানিয়েছে পোশাক শিল্প-কারখানার মালিকরা। বৃহস্পতিবার বিকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে দেখা করে তারা এই দাবি তুলে ধরেন।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সঙ্গে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিল অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ গার্মেন্টস এক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ টেরিটাওয়েল অ্যান্ড লিনেন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বৈঠক করে এই দাবি এই দাবি তুলে ধরেন তারা।
বিজিএমইএ নেতারা বলেন, দেশের বৃহত্তর রপ্তানি আয়ের এই খাতটি যেন উৎপাদন অব্যাহত রাখতে পারে এবং আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারে এই উদ্দেশ্যে এমন দাবি জানানো হয়। এ ব্যাপারে শনিবার একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেখান থেকেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে কারখানা মালিকদের জানানো হয়েছে।
২৩ জুলাই থেকে শুরু হতে যাওয়া ১৪ দিনের লকডাউনে কাজ বন্ধ রাখা হলে রফতানিতে গুরুতর সমস্যা তৈরি হবে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছিলেন গার্মেন্টস মালিকরা। তারা জানান, পোশাক উৎপাদকদের জন্য জুলাই-আগস্ট মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এসময় পশ্চিমা বাজারে শীত ও বড়দিনের জন্য বিক্রি বেড়ে যায়। বাংলাদেশ থেকে রফতানি করা মোট পোশাকের ৪০ শতাংশই এ দুই মাসে রফতানি হয়।
কেবিনেট সেক্রেটারির সঙ্গে বৈঠক শেষে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘সোয়েটার, জ্যাকেট, হুডির অল্প সময়ের জন্য সিজন থাকে। সে কারণে এই শিপমেন্টগুলো যদি দিতে না পারি, যেসব অর্ডার এনেছি, ফ্যাক্টরিগুলো দেউলিয়া অবস্থার মধ্যে চলে যাবে। ক্লোজিং ভীষণ সমস্যায় পড়ে যাবে। এজন্য জীবন-জীবিকার সমন্বয় করে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছি। শনিবার সভা আছে, সেখানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।
গত বছর করোনার সময় চার বিলিয়ন ডলারের অর্ডার বাতিল হয়েছিল। অর্ডারগুলো ধীরে ধীরে ফিরে পেয়েছি। কিন্তু এই বিধিনিষেধ ঘোষণা শোনার পর থেকে বায়াররা অর্ডার স্লো করে দিয়েছে, বন্ধ করে দিয়েছে।সামনে শীতের জন্য কাজ চলছে এখন।এমন সময় গার্মেন্টস শিল্প দুই সপ্তাহের জন্য বন্ধ থাকলে দেউলিয়া হয়ে যাবে এ শিল্প।মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে অনুরোধ করেছি। উনারা বিবেচনা করবেন বলে আশা করছি। শিপমেন্ট করতে না পারলে অর্ডার বাতিল হয়ে যাবে। শিপমেন্ট যাতে করতে পারি, সেই সহযোগিতা চাচ্ছি।’
বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে লেখা উনাদের চিঠি পেয়েছি। চিঠিটি যত দ্রুত সম্ভব প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছাব। লকডাউন চলাকালে শিল্প-কারখানা খোলা থাকবে কি না, সেটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে।
উনি যে সিদ্ধান্ত দেবেন, তা আপনাদেরকে পরে জানিয়ে দেওয়া হবে।