তালবানদের অনুসন্ধানের মুখে সাবেক আফগান সরকারের অনির্দিষ্ট সংখ্যক ইমেইল অ্যাকাউন্ট লক করে দিয়েছে গুগল। সম্প্রতি এ ব্যাপারে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এক সূত্র।
তালেবানরা যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত সরকারের কাছ থেকে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ দখলে নেওয়ার পরে শঙ্কা তৈরি হয়েছে বায়েোমেট্রিক ডেটা ও আফগানিস্তানে বেতনের ডেটাবেজ নিয়েও। অনেকের আশঙ্কা, সেখান থেকে পাওয়া তথ্য ‘শত্রু’ খোঁজার কাজে ব্যবহৃত হতে পারে।
শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে গুগল জানিয়েছে, তাদের প্রতিষ্ঠান আফগানিস্তানের পরিস্থিতিতে নজর রাখছে এবং সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্ট নিরাপদ করতে সাময়িক ব্যবস্থা নিচ্ছে।
তালেবানরা সাবেক কর্মকর্তাদের দাপ্তরিক ইমেইল হাতে পাওয়ার চেষ্টা করছে বলে ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন আফগানিস্তানের সাবেক এক সরকারি কর্মী।
গত মাসের শেষে ওই কর্মীকে তার কর্মরত মন্ত্রণালয়ের সার্ভারে থাকা ডেটা সংরক্ষণের নির্দেশও দিয়েছে তালেবানরা। ‘আমি যদি এটা করি, তাহলে তারা মন্ত্রণালয়ের আগের নেতৃত্বের ডেটায় ও অফিশিয়াল যোগাযোগে প্রবেশাধিকার পেয়ে যাবে।’ – বলেছেন ওই কর্মী।
সাবেক ওই কর্মী তালেবানের নির্দেশ মানেনি এবং তারপর থেকে লুকিয়ে রয়েছেন। ওই ব্যক্তির সুরক্ষার জন্য তার বা তার মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশ করেনি ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।
প্রকাশ্যে থাকা মেইল এক্সচেঞ্জার রেকর্ড বলছে, প্রায় দুই ডজন আফগান সরকারি সংস্থা দাপ্তরিক কাজে গুগলের সার্ভার ব্যবহার করতো। এর মধ্যে অর্থ, শিল্প, উচ্চ শিক্ষা এবং খনিজের মতো মন্ত্রণালয়গুলো রয়েছে। আফগানিস্তানের প্রেসিডেনশিয়াল প্রটোকল কার্যালয়ও গুগল ব্যবহার করতো বলে উল্লেখ করা রয়েছে রেকর্ডে। স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষরাও গুগলের সেবা নিচ্ছিল।
সরকারি ডেটাবেজ ও ইমেইল চাওয়ার মধ্য দিয়ে সাবেক প্রশাসনের কর্মীদের তথ্য বের হয়ে আসতে পারে। এ রকম কর্মীর মধ্যে রয়েছেন সাবেক মন্ত্রী, সরকারি ঠিকাদার, উপজাতীয় মিত্র এবং বিদেশী অংশীদাররা।
‘এটি অনেক তথ্য সম্পদ দিয়ে দেবে’ বলে মন্তব্য করেছেন ইন্টারনেট ইন্টিলিজেন্স প্রতিষ্ঠান ‘ডোমেইনটুলস’ এর নিরাপত্তা গবেষক চ্যাড অ্যান্ডারসন। তিনি আরও বলেছেন, ‘শুধু গুগল শিটে থাকা একটি কর্মী তালিকাই অনেক বড় একটি সমস্যা।’
মেইল এক্সচেঞ্জার রেকর্ড জানিয়েছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং প্রেসিডেন্সিসহ অনেক আফগান সরকারি সংস্থা মাইক্রোসফটেরও ইমেইল সেবা ব্যবহার করতো। কিন্তু ডেটা বেহাত হওয়া ঠেকাতে গুগলের মতো মাইক্রোসফটও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে কি না, তা এখনও জানা যায়নি।
মাইক্রোসফট এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।