দেশে প্রথম ধাপের স্থগিত ১৬১টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ও ৯টি পৌরসভা এবং স্থানীয় সরকার পরিষদের কয়েকটি উপ-নির্বাচনের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শনিবার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে।
আগামীকাল সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এসব নির্বাচনের একটানা ভোটগ্রহণ চলবে।
সুষ্ঠুভাবে ভোট সম্পন্ন করতে এরইমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এসব অঞ্চলে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে যান চলাচল। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ভোটকেন্দ্রে মাস্ক পরে প্রবেশ করতে হবে ভোটারদের।
ইসি সংশ্লিষ্টরা জানান, কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, শনিবার দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে সব প্রার্থীদের প্রচারণা শেষ হয়েছে। ফলে শনিবার দিবাগত রাত ১২টার পরে কোনো প্রার্থী প্রচারণা চালাতে পারবে না। যদি কেউ প্রচারণা চালায় তাহলে আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে রিটার্নিং কর্মকর্তারা ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার রয়েছে।
ইসির যুগ্ম সচিব এসএম আসাদুজ্জামান বলেন, ইউপি ভোট নিয়ে নির্বাচন কমিশন থেকে সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। এ ছাড়াও প্রত্যেক কেন্দ্রে স্যানিটাইজার ও মাস্ক থাকবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, নির্বাচনী এলাকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ইতিমধ্যেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মাঠে নেমেছেন। সোমবার দেশের ৬টি জেলার ২৩টি উপজেলার ১৬১ ইউপিতে ভোটগ্রহণ হবে।
নির্বাচনী এলাকায় কোনো সাধারণ ছুটি থাকছে না। তবে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সাধারণ ছুটির আওতায় থাকবেন। এ ছাড়া ভোট দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে ছুটি নিতে পারবেন ভোটাররা।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ১৬১টি ইউননিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন ও নয়টি পৌরসভা নির্বাচনে পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে মাঠে নেমেছেন র্যা ব, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্যরা। নিয়োজিত রয়েছে প্রতি কেন্দ্রে ২২ জনের ফোর্স। তাদের মধ্যে ১৫ জনের সঙ্গে থাকবে লাঠি। বাকিরা অস্ত্র নিয়ে কেন্দ্র পাহারা দেবেন।
নির্বাচন পরিচালনা শাখার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্থানীয় প্রশাসনের চাহিদার ভিত্তিতে নোয়াখালী ও কক্সবাজারে পরিকল্পনা চেয়েও অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হচ্ছে।
ইসি নির্দেশিত ছক অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পরিপত্রে বলা হয়েছে, ভোটকেন্দ্র ছাড়াও নির্বাচনী এলাকায় দায়িত্ব পালন করবে পুলিশ, র্যা ব, বিজিবি, কোস্টগার্ডের মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স। এক্ষেত্রে প্রতি ইউপিতে পুলিশ, এপিবিএন, আনসারের সমন্বয়ে একটি ১৬১টি মোবাইল ফোর্স, তিনটি ইউপির জন্য একটি করে মোট ৫৩টি স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন থাকবে।
এদিকে প্রতি উপজেলায় র্যা বের দুটি করে মোবাইল ও একটি করে স্ট্রাইকিং টিম, প্রতিটি উপজেলায় বিজিবির দুই প্লাটুন সদস্য মোবাইল টিম ও এক প্লাটুন থাকবে স্ট্রাইটিং টিম হিসেবে। আর কোস্টগার্ডও নিয়োজিত থাকবে বিজিবি মোতায়েনের ছক অনুযায়ী।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবলোকনের জন্য নির্বাচনের পাঁচ দিন আগ থেকে মনিটরিং সেল স্থাপন করতে হবে। যা নির্বাচনের পরেও দুদিন চালু থাকবে।
গত ২১ জুন অনুষ্ঠিত ২০৪টি ইউপি ভোটের সঙ্গে এ নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনার প্রকোপ বাড়ায় নির্বাচন স্থগিত রাখে ইসি। আগামীকাল স্থগিত কেন্দ্রগুলোর ভোট অনুষ্ঠিত হবে।