দেশের ৩ কোটি ৭০ লাখ শিশুর ভবিষ্যৎ ঝুঁকিতে দেশের ৩ কোটি ৭০ লাখ শিশুর ভবিষ্যৎ ঝুঁকিতে – Sabuj Bangla Tv
  1. shahinit.mail@gmail.com : admin :
  2. khandakarshahin@gmail.com : সবুজ বাংলা টিভি : সবুজ বাংলা টিভি
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৩৩ পূর্বাহ্ন
নোটিশ-
বাংলাদেশের প্রথম অনলাইন টিভি চ্যানেল সবুজবাংলা টিভি এর জেলা/উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে...

দেশের ৩ কোটি ৭০ লাখ শিশুর ভবিষ্যৎ ঝুঁকিতে

সবুজ বাংলা টিভি
  • প্রকাশ কাল | বুধবার, ২০ অক্টোবর, ২০২১
  • ১১৬ পাঠক

২০২০ সালের প্রথম দিকে কোভিড-১৯ মহামারি শুরুর পর থেকে দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। ফলে ৩ কোটি ৭০ লাখ শিশুর পড়াশোনা ব্যাহত হয়েছে।

মহামারির কারণে স্কুল বন্ধের সময়ে প্রাক্‌-প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের প্রতি তিনজন শিক্ষার্থীর মধ্যে দুজনের কাছে দূরশিক্ষণ সেবা পৌঁছানো যায়নি।
দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, পূর্ব এশিয়াসহ এশিয়ার আরও প্রায় ৮০ কোটি শিশুর পড়াশোনা ব্যাহত হয়েছে করোনায়।
মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) ইউনিসেফ ও ইউনেসকো প্রকাশিত এশিয়ায় শিক্ষা খাতের ওপর ‘কোভিড-১৯–এর প্রভাব ও মোকাবিলা কার্যক্রমবিষয়ক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ’ (সিটএন রিপোর্ট) শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে শিশুদের পড়াশোনার ওপর মহামারির অব্যাহত প্রভাব এবং তা মোকাবিলায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সরকারের গৃহীত কর্মসূচি ও উদ্যোগের কথা তুলে ধরা হয়। সাধারণত এ সময় শিশুদের বার্ষিক পরীক্ষার প্রস্তুতি চলে এবং এরপর ছুটি হয়। সেই সময়ে এ প্রতিবেদনে নিরাপদ হওয়ামাত্রই স্কুল খুলে দেওয়ার জন্য সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে এখনো ফিলিপাইনসহ কিছু দেশে স্কুলগুলো বন্ধ আছে। সে কারণে প্রাক্‌-প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের ২ কোটি ৭০ লাখ শিক্ষার্থীর সশরীরে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। গত বছরের ১৭ মার্চের পর বাংলাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। গত ১২ সেপ্টেম্বর স্কুলগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে।
পৃথিবী যখন ২০২১ সালের শেষ প্রান্তিকে প্রবেশ করেছে, তখনো দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, পূর্ব এশিয়াসহ এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে করোনার নতুন ধরন ছড়িয়ে পড়ার কারণে দ্বিতীয় বছরের মতো স্কুল বন্ধ থাকছে।
এভাবে ক্রমাগত স্কুল বন্ধ থাকার সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়গুলোর পরিণতি অত্যন্ত গুরুতর, যার মধ্যে রয়েছে পড়াশোনার ক্ষতি, মানসিক দুর্দশা, স্কুলের খাবার ও নিয়মিত টিকা না পাওয়া, কাঠামোগত শিক্ষা থেকে ঝরে পড়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি এবং শিশুশ্রম ও বাল্যবিবাহ বৃদ্ধি।
ভয়াবহ এই পরিণতিগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটি ইতিমধ্যে অসংখ্য শিশুকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এসব ক্ষতির কিছু অংশ আগামী বছরগুলোয় অনুভূত হতে থাকবে।
পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ইউনিসেফের পরিচালক মার্কোলুইজি কোরসি এ বিষয়ে বলেন, ‘শিক্ষাসেবার ব্যাঘাত শিশুদের ওপর, বিশেষ করে সবচেয়ে ঝুঁকির মুখে থাকা শিশুদের ওপর যে প্রভাব ফেলেছে, তা আমরা উপেক্ষা করতে পারি না। যখন স্কুল বন্ধ থাকে, তখন শিশুরা শেখার ও বেড়ে ওঠার সবচেয়ে বড় সুযোগটি হারায়। পুরো একটি প্রজন্মের ভবিষ্যৎ ঝুঁকিতে রয়েছে। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিরাপদে বিদ্যালয়গুলো পুনরায় চালু করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে আমাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা প্রয়োজন। অন্যথায় পড়াশোনার এই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা কঠিন হবে।’
তবে এই বন্ধের মধ্যে এশিয়ার বিভিন্ন দেশ শিক্ষার্থীদের দূরশিক্ষণ পদ্ধতিতে শিক্ষাদানের পদক্ষেপ নিয়েছে। ইউনিসেফের সহায়তায় ক্যাম্পেইন ফর পপুলার এডুকেশন (সিএএমপিই) পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে মহামারির কারণে স্কুল বন্ধ থাকার সময়ে প্রাক্‌-প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের প্রতি তিনজন শিক্ষার্থীর মধ্যে দুজনের কাছে দূরশিক্ষণ সেবা পৌঁছানো যায়নি। বস্তুগত সম্পদ ও প্রযুক্তি ব্যবহারে সহায়তার অভাব ছাড়াও এই কঠিন সময়ে সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও অনেক কন্যাশিশুর দূরশিক্ষণ পদ্ধতিতে শিক্ষা গ্রহণে যেসব বিষয় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে, তার মধ্যে ছিল শিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশের অভাব, গৃহস্থালির কাজ করার চাপ বৃদ্ধি এবং বাড়ির বাইরে কাজ করতে বাধ্য হওয়া।
এ কারণেই শিশুদের স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে স্কুল বন্ধ থাকার সময়ে সব শিশুর কাছে প্রয়োজনীয় সমতাভিত্তিক ও অংশগ্রহণমূলক দূরশিক্ষণ সেবা পৌঁছানোর ওপর প্রতিবেদনে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।
একই সঙ্গে শিক্ষার বর্তমান নিম্ন হারের বিষয়টির সমাধান ও শিক্ষার বিভাজন কমিয়ে আনার জন্য সাহায্য করতে এবং শিক্ষা তহবিল রক্ষা–সংরক্ষণে শিক্ষা ও শিক্ষকদের জন্য সহায়তা জোরদার করতে প্রতিবেদনে সরকার ও অংশীদারদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, ‘১৮ মাস বন্ধ রাখার পর বাংলাদেশে এখন স্কুলগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। এ সময় সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের প্রতি বিশেষ মনোযোগ রেখে শিক্ষার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে হবে। শিশুদের সাহায্য করার জন্য দ্রুততার সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে আমাদের প্রচেষ্টায় কোনো ঘাটতি রাখা উচিত নয়। শিক্ষাব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে এবং ডিজিটাল বৈষম্য কমিয়ে আনতে বিনিয়োগ করার এখনই সময়।’
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) হিসাবে, সংকট কাটিয়ে উঠতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া না হলে এশিয়া অঞ্চলে ১ দশমিক ২৩ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে। এর পরিমাণ এ অঞ্চলের ২০২০ সালের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৫ দশমিক ৪ শতাংশের সমান। বিদ্যমান তথ্য-প্রমাণ বলছে, একটি সংকটের মুহূর্তে পড়াশোনার ক্ষতি সামাল দিতে শুরুতেই ব্যবস্থা নেওয়া হলে তা অনেক সাশ্রয়ী ও কার্যকর হয়। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার পেছনে বিনিয়োগ অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার, প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধিকে সহায়তা করবে।
দক্ষিণ এশিয়ায় ইউনিসেফের আঞ্চলিক পরিচালক জর্জ লারিয়া-আদজেই বলেন, সরকার, অংশীদার ও বেসরকারি খাতকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। শুধু সঠিক কৌশল ও মাত্রায় বিনিয়োগ পাওয়ার জন্যই নয়, বরং স্কুল খোলা বা বন্ধ যা–ই থাকুক না কেন, সব শিশুর জন্য একটি মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে শিক্ষার প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে সক্ষম আরও টেকসই, কার্যকর ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বিনিয়োগ প্রয়োজন।
মহামারির কারণে স্কুল থেকে শিশুদের—বিশেষ করে মেয়েশিশু এবং দরিদ্র ও প্রান্তিক পরিবারের শিশুদের—ঝরে পড়ার বর্ধিত ঝুঁকি সাম্প্রতিক দশকগুলোয় স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে অর্জিত অগ্রগতিকে উল্টে দিতে পারে। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, এশিয়া যদি আগামী নয় বছরে জাতিসংঘের ২০৩০ সালের অ্যাজেন্ডার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার শিক্ষাবিষয়ক লক্ষ্য অর্জন করতে চায়, তাহলে এ ধরনের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে শিক্ষা বাজেট গড়ে ১০ শতাংশ বাড়াতে হবে।
ইউনেসকো ব্যাংককের পরিচালক শিগেরু আয়োগি বলেন, ‘স্কুলে ফিরে আসা শিশুদের পড়াশোনার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বড় ধরনের প্রচেষ্টার পাশাপাশি আমাদের এটাও মনে রাখতে হবে, এশিয়ার ১২ কোটি ৮০ লাখ শিশু মহামারি শুরুর আগে থেকেই স্কুলের বাইরে ছিল, যা বিশ্বব্যাপী স্কুলের বাইরে থাকা শিশুদের সংখ্যার প্রায় অর্ধেক। এটি শিক্ষাজনিত সংকট, যা নিরসন করা প্রয়োজন।’
মহামারি শুরুর পর থেকে শিশুদের পড়াশোনা অব্যাহত রাখা এবং স্কুলগুলো নিরাপদে পুনরায় চালু ও পরিচালনা নিশ্চিত করতে ইউনিসেফ ও ইউনেসকো জাতীয় সরকারগুলোকে সহায়তা দিয়ে আসছে।

আমাদের সংবাদটি শেয়ার করুন..

এ পাতার আরও খবর

Sabuj Bangla Tv © All rights reserved- 2011| Developed By

Theme Customized BY WooHostBD