ভারত কর্তৃপক্ষ তিস্তা ব্যারেজের গাজলডোবা অংশের সবগুলো গেট খুলে দেয়ার পর বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রামের হাজারো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। খবর: বিবিসি
এছাড়া হঠাৎ পানি বৃদ্ধি এবং প্রবল পানির তোড়ে তিস্তা ব্যারেজের বাংলাদেশ অংশের স্পার বাঁধ এবং সংলগ্ন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা জানা যাচ্ছে।
ভারত তিস্তা ব্যারেজের গেট খুলে দেয়ায় তিস্তা নদীর বাংলাদেশ অংশে হঠাৎ পানি বৃদ্ধি হয়ে বুধবার বিপৎসীমা ছাড়িয়ে যায়। এক পর্যায়ে কর্তৃপক্ষ ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করে। রেড অ্যালার্ট জারি করা হলে নিচু এলাকা থেকে মানুষজন ও গবাদিপশু সরিয়ে নেবার আদেশ দেয় কর্তৃপক্ষ।
তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আসফাউদদৌলা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় তিস্তা নদীতে পানি বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
“সেখানে মধ্যরাত থেকেই পানির প্রবাহ কমতে শুরু করেছে। আজ আরো কমবে বলে আমরা আশা করছি।”
তবে তিনি জানিয়েছেন, পানির তোড়ে তিস্তা ব্যারেজের বেশ কিছু স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এর মধ্যে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ২৫০ মিটারের বেশি এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে অনেকগুলো জায়গায়।
তিস্তা নদীতে ২১টি স্পার রয়েছে, এর মধ্যে ছয়টি ভেঙে গেছে বলে জানান তিনি।
এর আগে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে তিস্তা নদী তীর সংলগ্ন এবং কাছাকাছি গ্রাম বিশেষ করে লালমনিরহাট, নীলফামারী এবং রংপুর জেলার ৫০টির মত গ্রাম তলিয়ে গেছে।
এই মৌসুমে সেখানকার মানুষ ধান, ভুট্টা, আলু, পেঁয়াজ আবাদ করে।
স্থানীয় মানুষেরা বলছেন, আকস্মিক পানি উঠে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
নীলফামারীর জেলা প্রশাসক মোঃ হাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, তার জেলার চারটি ইউনিয়নের ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
বুধবার তিস্তার পাড় ঘেঁষে থাকা গ্রামের মানুষকে বাড়িঘর থেকে সরিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়েছিল।
সকাল থেকে অনেকে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন।
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক মোঃ আবু জাফর বলেন, তার জেলার তিনটি উপজেলার ৩০টির মত গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।