ফরিদপুরে ছুরিকাঘাতে প্রান্ত মিত্র (২৩) নামে এক কলেজছাত্রকে খুন করেছে দুর্বৃত্তরা।
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) ভোর সাড়ে ৬টার দিকে জেলা শহরের আলীপুর ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
প্রান্ত জেলা শহরের ওয়ারলেস পাড়ায় বাবা-মায়ের সঙ্গে ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। তার বাবার নাম বিকাশ মিত্র। প্রান্ত সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অনার্স (উদ্ভিদবিদ্যা) তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। এছাড়া তিনি বিডি স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনের একজন কর্মী ছিলেন।
বন্ধুর বোনকে রক্ত দিতে রাতে বাসা থেকে বের হয়ে তিনি খুন হন বলে নিহতের পরিবারের দাবি।
প্রান্তর বাবা জেলা শহরের দীপ শিখা স্কুলে শিক্ষকতা করার সুবাদে দীর্ঘদিন ফরিদপুর শহরে বসবাস করছেন। বিকাশ মিত্র এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক। মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। প্রান্ত তার বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতেন। প্রান্তর গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ী জেলার পাচুরিয়া গ্রামে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সোমবার (২৪ জুলাই) রাত আড়াইটার দিকে বন্ধু হৃদয় তাকে (প্রান্তকে) ফোন দিয়ে বলেন, ‘তার বোনের সিজার অপারেশন করতে হবে, রক্ত লাগবে। ’ এ খবরে রক্ত দিতে প্রান্ত ওই সময়ই বাসা থেকে বের হন। ভোর হতে চললেও প্রান্ত বাসায় না ফেরায় দুশ্চিন্তায় পরে যায় পরিবারের সদস্যরা। মোবাইলফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। সকালে স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর শুনে আলীপুর ব্রিজের কাছে ছুটে আসে পরিবারের সদস্যরা। পরে তার মরদেহ দেখতে পায়।
কোতোয়ালি থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামিম হাসান জানান, ভোরে খবর পেয়ে আলীপুর ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা থেকে কলেজছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহ থানায় রাখা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার বাংলানিউজকে বলেন, নিহত প্রান্তের শরীরে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে, এ হত্যার কারণ এখনও জানা যায়নি। পুলিশ বিষয়টি উদঘাটনে ও জড়িতদের খুঁজে বের করতে কাজ করছে।
তিনি বলেন, মরদেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর নিহতের শরীরের আঘাতের বিষয়টি আরও ক্লিয়ার হবে এবং মৃত্যুর বিষয়টিও জানা যাবে।
ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর অসীম কুমার সাহা বাংলানিউজকে বলেন, প্রাপ্তর মরদেহ উদ্ধারের খবরে আমরা মর্মাহত।
তিনি বলেন, ফরিদপুর একটি নিরিবিলি ও শান্ত জনপদ। সেখানে এ রকম একটি হত্যাকাণ্ড মেনে নেওয়া যায় না। আমি এ হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাচ্ছি। এছাড়া পুলিশ দ্রুত এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনবেন বলে বিশ্বাস করি।