দ্বিতীয় সারির ক্লাব কভেন্ট্রি এফসি। তাই সেমিফাইনালের আগে ফেভারিট হিসেবে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে মিলিয়ন মাইলের ব্যবধানে এগিয়ে রেখেছিলেন দলটির কোচ মার্ক রবিনস।
মাঠের লড়াইয়ে সেই ছাপ দেখা যায় শুরু থেকেই। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের শেষ ২৫ মিনিটে যা হলো, তা আগে জানলে হয়তো এ কথা বলতেন না তিনি। তিন গোলে পিছিয়ে থাকার পরও অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়ায় তার দল। ৩-৩ গোলের ড্র নিয়ে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়। মহানাটকীয়তা শেষে সেখানেও দুই দল নিজেদের আলাদা করতে পারেনি। তবে টাইব্রেকারে কভেন্ট্রিকে ৪-২ ব্যবধানে হারিয়ে এফএ ফাইনালে পা রাখে ইউনাইটেড। যেখানে আগামী ২৫ মে নগর প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার সিটির মুখোমুখি হবে তারা।
ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে রূপকথার গল্প লেখার অনেকটা কাছে গিয়েও কেঁদে ফিরতে হলো কভেন্ট্রিকে। সামর্থ্যের সবটুকু দিয়েও স্নায়ুচাপের কাছে এসে পরাস্ত হলো তারা। তাই পূরণ হয়নি ৩৭ বছর পর এফএ কাপের ফাইনাল খেলার স্বপ্ন। টাইব্রেকারে অবশ্য ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে প্রথম শট নিতে এসে গোল করতে ব্যর্থ হন কাসেমিরো। কিন্তু কভেন্ট্রি গড়বড় করে তৃতীয় ও চতুর্থ শটে এসে। ক্যালাম ও’হারের শট ঠেকিয়ে দেন ইউনাইটেড গোলরক্ষক আন্দ্রে ওনানা। পরে বেন শিয়াফও জালের ঠিকানা খুঁজে পাননি। কাসেমিরো মিস করলেও ইউনাইটেডের হয়ে বাকি চার শটে গোল করেন দিয়েগো দালোত, ক্রিস্টিয়ান এরিকসেন, ব্রুনো ফার্নান্দেস ও রাসমুস হইলুন।
এর আগে ম্যাচের প্রথমার্ধে দাপুটে ফুটবল উপহার দেয় রেড ডেভিলরা। ২৩ মিনিটে তাদের এগিয়ে দেন স্কট ম্যাকটমিনে। বিরতির আগে যোগ করা সময়ে ব্রুনোর কর্নার থেকে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন হ্যারি ম্যাগুয়ের। দ্বিতীয়ার্ধেও চাপ ধরে রাখে ইউনাইটেড। ৫৮তম মিনিটে তৃতীয় গোলটি করেন ব্রুনো। তাতে ইউনাইটেড সহজ জয়েই ফাইনালে পৌঁছাবে বলে মনে হচ্ছিল। কিন্তু কে জানত ইস্তাম্বুলের মিরাকলের মতো সেই তিন গোল দারুণভাবে ফিরিয়ে দেবে কভেন্ট্রি।
৭১ মিনিটে দলটির হয়ে প্রথম গোলটি করেন এলিস সিমস। আট মিনিট পর আরও এক শোধ দেন ক্যালাম। আর যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে পেনাল্টি থেকে দলকে সমতায় ফেরান হাজি রাইট।
অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে আক্রমণ ও প্রতিআক্রমণে জমে ওঠে খেলা। দুদলেরই একবার করে শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। একদম শেষ মুহূর্তে জয়সূচক গোল পেয়েই গিয়েছিল কভেন্ট্রি। কিন্তু রেড ডেভিলদের বাঁচিয়ে দেয় ভিএআর। কেননা গোলদাতা ভিক্টর থর্পকে বলের জোগান দেওয়ার আগে অফসাইডে ছিলেন রাইট। মুহূর্তে স্বপ্নভঙ্গ হওয়া কভেন্ট্রির গল্প টাইব্রেকারেও বদলায়নি!