ঢাকা ০৫:৩৬ এএম, মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সন্তানের ফোন ব্যবহারে লাগাম টানার উপায়

সবুজবাংলা টিভি ডটকম-
  • প্রকাশকাল ০৮:০৮:০৯ এএম, শুক্রবার, ১ অগাস্ট ২০২৫ ৩২ পাঠক
সবুজবাংলা টিভি এর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

স্মার্টফোন শিশুদের জীবনে যেমন স্থান করে নিয়েছে, তেমনি তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, স্মার্টফোন শিশুকে ‘স্মার্ট’ করে— এমন ধারণা বাস্তবসম্মত নয়।

 

যুক্তরাষ্ট্রের ‘আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব পেডিয়াট্রিকস’ জানায়, ঘুমের সময় শিশুকে ফোন ব্যবহার করতে না দেওয়াই ভালো— এতে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে। তবে বাস্তবে সন্তানকে এই নিয়ম মানাতে গিয়ে অভিভাবকদের বেগ পেতে হয়।

এই প্রেক্ষাপটে কিছুটা স্বস্তির তথ্য দিয়েছে নিউজিল্যান্ডের ওটাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা। এতে বলা হয়েছে, ঘুমানোর দুই ঘণ্টা আগে ফোন ব্যবহার করলে বড় ধরনের সমস্যা হয় না, তবে ঘুমাতে দেরি হয় এবং সকালে উঠতেও সময় লাগে।

১১-১৪ বছর বয়সী কিশোরদের ওপর চালানো ওই গবেষণায় দেখা গেছে, যদি কেউ ঘুমানোর সময় গোপনে ফোন ব্যবহার করে, তখন নেতিবাচক প্রভাব স্পষ্ট হয়।

গবেষক ব্র্যাডলি ব্রসনান বলেন, “ঘুম আর স্ক্রিন একসঙ্গে চললে ক্ষতি হয়। আপনি ঠিক করুন— স্ট্রিমিং করবেন, না ড্রিমিং?”

তবে তিনি জানান, ছোট শিশু ও কিশোরদের ওপর ফোনের প্রভাব এক নয়। শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে ঘুম অত্যন্ত জরুরি। ঘুমের ঘাটতি মনোযোগের অভাব, মানসিক চাপ ও স্থূলতার ঝুঁকি বাড়ায়।

এমন অবস্থায় কী করবেন অভিভাবকরা?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুর দৈনন্দিন রুটিনে ফোন ব্যবহারের নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করতে হবে। খাওয়ার সময়, পড়ার সময় ফোন ব্যবহার বন্ধ রাখতে হবে।

ব্রসনান বলেন, “আমাদের মস্তিষ্ক একসঙ্গে অনেক কিছু করতে পারে না। পড়ার সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় ঢুকলে মনোযোগ কমবেই। ”

তবে স্কুলের কাজে অনলাইন ব্যবহার লাগতেই পারে। তাই সীমারেখা টানা জরুরি। পাশাপাশি ইন্টারনেট ব্যবহারে ঝুঁকি যেমন সেক্সট্র্যাপ, ভুয়া প্রোফাইল ইত্যাদি সম্পর্কে খোলামেলা আলোচনা করতে হবে।

সবচেয়ে ভালো উপায় হলো— সন্তানকে নিয়ে অনলাইনে সময় কাটানো। একসঙ্গে কিছু শেখা, অ্যাপ ব্যবহার করা— এসব অভ্যাস তাকে নিরাপদ অনলাইন ব্যবহারে সহায়ক হতে পারে।

সবচেয়ে জরুরি, সন্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে ধীরে ধীরে ফোন ব্যবহারে সচেতন করে তোলা। এতে শিশুই নিজের মধ্যে নিয়ন্ত্রণের অভ্যাস গড়ে তুলবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

সন্তানের ফোন ব্যবহারে লাগাম টানার উপায়

প্রকাশকাল ০৮:০৮:০৯ এএম, শুক্রবার, ১ অগাস্ট ২০২৫

স্মার্টফোন শিশুদের জীবনে যেমন স্থান করে নিয়েছে, তেমনি তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, স্মার্টফোন শিশুকে ‘স্মার্ট’ করে— এমন ধারণা বাস্তবসম্মত নয়।

 

যুক্তরাষ্ট্রের ‘আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব পেডিয়াট্রিকস’ জানায়, ঘুমের সময় শিশুকে ফোন ব্যবহার করতে না দেওয়াই ভালো— এতে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে। তবে বাস্তবে সন্তানকে এই নিয়ম মানাতে গিয়ে অভিভাবকদের বেগ পেতে হয়।

এই প্রেক্ষাপটে কিছুটা স্বস্তির তথ্য দিয়েছে নিউজিল্যান্ডের ওটাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা। এতে বলা হয়েছে, ঘুমানোর দুই ঘণ্টা আগে ফোন ব্যবহার করলে বড় ধরনের সমস্যা হয় না, তবে ঘুমাতে দেরি হয় এবং সকালে উঠতেও সময় লাগে।

১১-১৪ বছর বয়সী কিশোরদের ওপর চালানো ওই গবেষণায় দেখা গেছে, যদি কেউ ঘুমানোর সময় গোপনে ফোন ব্যবহার করে, তখন নেতিবাচক প্রভাব স্পষ্ট হয়।

গবেষক ব্র্যাডলি ব্রসনান বলেন, “ঘুম আর স্ক্রিন একসঙ্গে চললে ক্ষতি হয়। আপনি ঠিক করুন— স্ট্রিমিং করবেন, না ড্রিমিং?”

তবে তিনি জানান, ছোট শিশু ও কিশোরদের ওপর ফোনের প্রভাব এক নয়। শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে ঘুম অত্যন্ত জরুরি। ঘুমের ঘাটতি মনোযোগের অভাব, মানসিক চাপ ও স্থূলতার ঝুঁকি বাড়ায়।

এমন অবস্থায় কী করবেন অভিভাবকরা?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুর দৈনন্দিন রুটিনে ফোন ব্যবহারের নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করতে হবে। খাওয়ার সময়, পড়ার সময় ফোন ব্যবহার বন্ধ রাখতে হবে।

ব্রসনান বলেন, “আমাদের মস্তিষ্ক একসঙ্গে অনেক কিছু করতে পারে না। পড়ার সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় ঢুকলে মনোযোগ কমবেই। ”

তবে স্কুলের কাজে অনলাইন ব্যবহার লাগতেই পারে। তাই সীমারেখা টানা জরুরি। পাশাপাশি ইন্টারনেট ব্যবহারে ঝুঁকি যেমন সেক্সট্র্যাপ, ভুয়া প্রোফাইল ইত্যাদি সম্পর্কে খোলামেলা আলোচনা করতে হবে।

সবচেয়ে ভালো উপায় হলো— সন্তানকে নিয়ে অনলাইনে সময় কাটানো। একসঙ্গে কিছু শেখা, অ্যাপ ব্যবহার করা— এসব অভ্যাস তাকে নিরাপদ অনলাইন ব্যবহারে সহায়ক হতে পারে।

সবচেয়ে জরুরি, সন্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে ধীরে ধীরে ফোন ব্যবহারে সচেতন করে তোলা। এতে শিশুই নিজের মধ্যে নিয়ন্ত্রণের অভ্যাস গড়ে তুলবে।