ঢাকা ১০:২৪ এএম, রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পানির চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ বরিশাল সিটি করপোরেশন

সবুজবাংলা টিভি ডটকম-
  • প্রকাশকাল ০৩:২৬:০৩ এএম, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ৬ পাঠক
সবুজবাংলা টিভি এর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) প্রতিষ্ঠার ২৩ বছর পার হলেও এখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি ওয়াসা। পানির বিল ও প্রভাব হাতছাড়া হওয়ার শঙ্কায় ওয়াসা প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব বার বার প্রত্যাখ্যান করেছে বিসিসি। এদিকে পানির সংকট মোকাবিলা যত্রতত্র সাবমারসিবল স্থাপন করায় এর প্রভাব পড়ছে ভূ-গর্ভস্থ পানিতে।

বরিশাল জেলা থেকে বিভাগে উন্নীত হয় ১৯৯৩ সালে। বিভাগীয় এই শহরটি সিটি করপোরেশনে উন্নীত হয় ২০০২ সালে। বিসিসির প্রতিষ্ঠালগ্নে এই নগরীর জনসংখ্যা ছিল আড়াই লাখ, আর এখন ৬ লাখ। নগর পরিকল্পনাবিদদের মতে, মাত্র ৬৮ বর্গকিলোমিটার আয়তনের নগরীতে বিশাল জনগোষ্ঠীর বসবাস। তাদের পানির চাহিদা পূরণে ওয়াসার বিকল্প নেই।

বরিশাল নগর উন্নয়ন অধিদপ্তরের পরিকল্পনাবিদ মো. বায়জিদ বলেন, ২০০২ থেকে ২০২৫ সালে বরিশাল নগরীর জনসংখ্যা বেড়েছে সাড়ে তিন লাখ। এত বিপুল জনগোষ্ঠীর পানির চাহিদা পূরণে একটা ভিন্ন ডেডিকেটেট প্রতিষ্ঠান থাকা দরকার। সেক্ষেত্রে ওয়াসা একটা সমাধান হতে পারে। তারা পানির সাথে পয়ঃনিষ্কাশন দেখবে। এছাড়া ভূ-গর্ভস্থ পানির বিপরীতে ওয়াসা সারফেস ওয়াটারের ব্যবহার করবে।

বরিশাল জনস্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, পানির সংকট মোকাবিলায় সাবমারসিবল টিউবওয়েল স্থাপন করায় নগরীতে পানির স্তর গত দশ বছরে দ্বিগুণেরও বেশি নিচে নেমে গেছে। ইতোমধ্যে নগরীর জাগুয়া, কাশিপুর, চরবাড়িয়া, রায়পাশা, চরকাউয়া ইউনিয়ন এলাকায় পানির স্তর ১৫ ফুট থেকে ৪০ ফুট নিচে নেমে গেছে। এতে শঙ্কা প্রকাশ করে বেলা থেকে বলা হয়েছে, অবিলম্বে সারফেস ওয়াটারের ব্যবহার নিশ্চিত করতে ওয়াসার বিকল্প তারা দেখছেন না।

পরিবেশবিদ ও সামাজিক আন্দোলনের নেতা কাজী মিজানুর রহমান বলেন, ওয়াসা এখন নগরবাসীর প্রাণের দাবি। ৬ লক্ষাধিক নগরবাসীর জন্য একটা স্বতন্ত্র কর্তৃপক্ষ জরুরি। আমরা

বহুদিন ধরে এই বিষয়ে বলে আসলেও অজ্ঞাত কারণে রাজনীতিবিদরা বিষয়টিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। নগরবাসীর সুপেয় পানির চাহিদা মেটাতে ওয়াসার কোনো বিকল্প নেই।

বরিশাল জেলা বেলার সমন্বয়ক লিংকন গায়েন বলেন, বরিশাল নগরীতে ১৫ ফুটের বিপরীতে এখন ৪০ ফুটেরও নিচে খুঁজতে হচ্ছে পানির স্তর। এখানে প্রায় ৪ হাজার সাবমারসিবল টিউবওয়েল ব্যবহার করা হচ্ছে। কেননা বিসিসি নগরীর শতকরা ৫৪ ভাগ এলাকায় পানি দিতে পারছে না। এ অবস্থায় ওয়াসা এখানে বড় প্রয়োজন। তা না হলে আমাদের ভূÑগর্ভস্থ পানি আর থাকবে না। এমন হলে তা আমাদের পরিবেশ প্রতিবেশের জন্য মারাত্মক ঝুঁকির সৃষ্টি করবে।

বিসিসির পানি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ওমর ফারুক বলেন, ২০১৮ সাল থেকে বরিশাল নগরীতে ওয়াসা গঠনের চিঠি আসা শুরু হয়। ২০২২ সাল পর্যন্ত স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে এমন চিঠি এসেছে মোট ৬ বার। তারা বরিশালের পানির চাহিদা ও সরবরাহ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছিল। কিন্তু কোনো বারই আমরা কোনো তথ্য দেইনি। এমনকি ২০২২ সালে এখানে ওয়াসা প্রতিষ্ঠায় নেতিবাচক জবাব দিয়ে উত্তর পাঠানো হয়। চিঠিতে বলা হয় ‘বরিশালে ওয়াসা গঠনের প্রয়োজন নাই’।

বিসিসির এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পরিবেশবিদ, সাধারণ মানুষ, এমনকি বিসিসির কর্মীরাও। তাদের মতে, পানির বিল বাবদ বছরে ১০ কোটি টাকার আয়কে বিসিসি বড় করে দেখছে, জনসেবা এক্ষেত্রে ছিল উপেক্ষিত। পানি বিভাগ বিসিসির হাতছাড়া হলে তাদের ক্ষমতাও খর্ব হবে বলে তারা মনে করেন।

আব্দুস সালাম নামে একজন ভুক্তভোগী বলেন, বরিশাল বিভাগের ৩২ বছর বয়সে ৫ জন মেয়র দায়িত্ব পালন করেছেন। তারা সকলেই বিএনপি-আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এদের দায়িত্ব ছিল নগরবাসীর সেবা নিশ্চিত করা। কিন্তু তারা তা না করে নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত ছিলেন। তিনি বলেন, মানুষের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহ নিশ্চিতে কোনো ধরনের ভূমিকা পালন করেননি তারা। এখন পাম্পেও পানি উঠছে না। নগরবাসীর জনদাবি ওয়াসা প্রতিষ্ঠায়ও কেউ উদ্যোগ নেয়নি। কারণ এটা হলে তাদের আয় কমে যাবে; এই শঙ্কা থেকে তারা ওয়াসার বিরোধিতা করেছেন।

সাইফুল ইসলাম নামে আরেকজন বাসিন্দা বলেন, বিসিসি তাদের ক্ষমতা ও অর্থনৈতিক লাভের বিপক্ষে কখনোই অবস্থান নেয়নি। ওয়াসার জন্য আমরা অনেক আন্দোলন করেছি। কিন্তু ওয়াসা এলে বিসিসির বিরাট আয় হাতছাড়া হয়ে যাবে, এটা তারা সহ্য করতে পারছে না। আর দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আমাদের।

বিসিসির পানি বিভাগে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মতে, বিসিসির পানি বিভাগ যদি ওয়াসার হাতে চলে যায়, তাহলে বরাদ্দ বাড়বে, পাশাপাশি জনভোগান্তি কমে যাবে। এতে আমরা এখন যারা পানি বিভাগে উন্নয়ন খাতে চাকরি করি তারা রাজস্ব খাতে অনেক সুবিধাও পেতাম। কিন্তু সিটি মেয়ররা কোনোদিনই এটা চায়নি।

বিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল বারি বলেন, বরিশালে ওয়াসা একান্ত দরকার। সর্বশেষ সিলেটেও ওয়াসা হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে আমাদের ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে। এটা আমাদের শহরের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। ওয়াসা থাকলে অনেক বড় বরাদ্দও আসে। স্থানীয় সরকার বিভাগে ইতোমধ্যে আমরা কথা বলেছি। তারা আমাদের কাছ থেকে ওয়াসা প্রতিষ্ঠার প্রকল্প চেয়েছে, এটি দিলেই কার্যক্রম শুরু করা যাবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

পানির চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ বরিশাল সিটি করপোরেশন

প্রকাশকাল ০৩:২৬:০৩ এএম, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) প্রতিষ্ঠার ২৩ বছর পার হলেও এখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি ওয়াসা। পানির বিল ও প্রভাব হাতছাড়া হওয়ার শঙ্কায় ওয়াসা প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব বার বার প্রত্যাখ্যান করেছে বিসিসি। এদিকে পানির সংকট মোকাবিলা যত্রতত্র সাবমারসিবল স্থাপন করায় এর প্রভাব পড়ছে ভূ-গর্ভস্থ পানিতে।

বরিশাল জেলা থেকে বিভাগে উন্নীত হয় ১৯৯৩ সালে। বিভাগীয় এই শহরটি সিটি করপোরেশনে উন্নীত হয় ২০০২ সালে। বিসিসির প্রতিষ্ঠালগ্নে এই নগরীর জনসংখ্যা ছিল আড়াই লাখ, আর এখন ৬ লাখ। নগর পরিকল্পনাবিদদের মতে, মাত্র ৬৮ বর্গকিলোমিটার আয়তনের নগরীতে বিশাল জনগোষ্ঠীর বসবাস। তাদের পানির চাহিদা পূরণে ওয়াসার বিকল্প নেই।

বরিশাল নগর উন্নয়ন অধিদপ্তরের পরিকল্পনাবিদ মো. বায়জিদ বলেন, ২০০২ থেকে ২০২৫ সালে বরিশাল নগরীর জনসংখ্যা বেড়েছে সাড়ে তিন লাখ। এত বিপুল জনগোষ্ঠীর পানির চাহিদা পূরণে একটা ভিন্ন ডেডিকেটেট প্রতিষ্ঠান থাকা দরকার। সেক্ষেত্রে ওয়াসা একটা সমাধান হতে পারে। তারা পানির সাথে পয়ঃনিষ্কাশন দেখবে। এছাড়া ভূ-গর্ভস্থ পানির বিপরীতে ওয়াসা সারফেস ওয়াটারের ব্যবহার করবে।

বরিশাল জনস্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, পানির সংকট মোকাবিলায় সাবমারসিবল টিউবওয়েল স্থাপন করায় নগরীতে পানির স্তর গত দশ বছরে দ্বিগুণেরও বেশি নিচে নেমে গেছে। ইতোমধ্যে নগরীর জাগুয়া, কাশিপুর, চরবাড়িয়া, রায়পাশা, চরকাউয়া ইউনিয়ন এলাকায় পানির স্তর ১৫ ফুট থেকে ৪০ ফুট নিচে নেমে গেছে। এতে শঙ্কা প্রকাশ করে বেলা থেকে বলা হয়েছে, অবিলম্বে সারফেস ওয়াটারের ব্যবহার নিশ্চিত করতে ওয়াসার বিকল্প তারা দেখছেন না।

পরিবেশবিদ ও সামাজিক আন্দোলনের নেতা কাজী মিজানুর রহমান বলেন, ওয়াসা এখন নগরবাসীর প্রাণের দাবি। ৬ লক্ষাধিক নগরবাসীর জন্য একটা স্বতন্ত্র কর্তৃপক্ষ জরুরি। আমরা

বহুদিন ধরে এই বিষয়ে বলে আসলেও অজ্ঞাত কারণে রাজনীতিবিদরা বিষয়টিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। নগরবাসীর সুপেয় পানির চাহিদা মেটাতে ওয়াসার কোনো বিকল্প নেই।

বরিশাল জেলা বেলার সমন্বয়ক লিংকন গায়েন বলেন, বরিশাল নগরীতে ১৫ ফুটের বিপরীতে এখন ৪০ ফুটেরও নিচে খুঁজতে হচ্ছে পানির স্তর। এখানে প্রায় ৪ হাজার সাবমারসিবল টিউবওয়েল ব্যবহার করা হচ্ছে। কেননা বিসিসি নগরীর শতকরা ৫৪ ভাগ এলাকায় পানি দিতে পারছে না। এ অবস্থায় ওয়াসা এখানে বড় প্রয়োজন। তা না হলে আমাদের ভূÑগর্ভস্থ পানি আর থাকবে না। এমন হলে তা আমাদের পরিবেশ প্রতিবেশের জন্য মারাত্মক ঝুঁকির সৃষ্টি করবে।

বিসিসির পানি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ওমর ফারুক বলেন, ২০১৮ সাল থেকে বরিশাল নগরীতে ওয়াসা গঠনের চিঠি আসা শুরু হয়। ২০২২ সাল পর্যন্ত স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে এমন চিঠি এসেছে মোট ৬ বার। তারা বরিশালের পানির চাহিদা ও সরবরাহ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছিল। কিন্তু কোনো বারই আমরা কোনো তথ্য দেইনি। এমনকি ২০২২ সালে এখানে ওয়াসা প্রতিষ্ঠায় নেতিবাচক জবাব দিয়ে উত্তর পাঠানো হয়। চিঠিতে বলা হয় ‘বরিশালে ওয়াসা গঠনের প্রয়োজন নাই’।

বিসিসির এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পরিবেশবিদ, সাধারণ মানুষ, এমনকি বিসিসির কর্মীরাও। তাদের মতে, পানির বিল বাবদ বছরে ১০ কোটি টাকার আয়কে বিসিসি বড় করে দেখছে, জনসেবা এক্ষেত্রে ছিল উপেক্ষিত। পানি বিভাগ বিসিসির হাতছাড়া হলে তাদের ক্ষমতাও খর্ব হবে বলে তারা মনে করেন।

আব্দুস সালাম নামে একজন ভুক্তভোগী বলেন, বরিশাল বিভাগের ৩২ বছর বয়সে ৫ জন মেয়র দায়িত্ব পালন করেছেন। তারা সকলেই বিএনপি-আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এদের দায়িত্ব ছিল নগরবাসীর সেবা নিশ্চিত করা। কিন্তু তারা তা না করে নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত ছিলেন। তিনি বলেন, মানুষের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহ নিশ্চিতে কোনো ধরনের ভূমিকা পালন করেননি তারা। এখন পাম্পেও পানি উঠছে না। নগরবাসীর জনদাবি ওয়াসা প্রতিষ্ঠায়ও কেউ উদ্যোগ নেয়নি। কারণ এটা হলে তাদের আয় কমে যাবে; এই শঙ্কা থেকে তারা ওয়াসার বিরোধিতা করেছেন।

সাইফুল ইসলাম নামে আরেকজন বাসিন্দা বলেন, বিসিসি তাদের ক্ষমতা ও অর্থনৈতিক লাভের বিপক্ষে কখনোই অবস্থান নেয়নি। ওয়াসার জন্য আমরা অনেক আন্দোলন করেছি। কিন্তু ওয়াসা এলে বিসিসির বিরাট আয় হাতছাড়া হয়ে যাবে, এটা তারা সহ্য করতে পারছে না। আর দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আমাদের।

বিসিসির পানি বিভাগে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মতে, বিসিসির পানি বিভাগ যদি ওয়াসার হাতে চলে যায়, তাহলে বরাদ্দ বাড়বে, পাশাপাশি জনভোগান্তি কমে যাবে। এতে আমরা এখন যারা পানি বিভাগে উন্নয়ন খাতে চাকরি করি তারা রাজস্ব খাতে অনেক সুবিধাও পেতাম। কিন্তু সিটি মেয়ররা কোনোদিনই এটা চায়নি।

বিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল বারি বলেন, বরিশালে ওয়াসা একান্ত দরকার। সর্বশেষ সিলেটেও ওয়াসা হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে আমাদের ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে। এটা আমাদের শহরের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। ওয়াসা থাকলে অনেক বড় বরাদ্দও আসে। স্থানীয় সরকার বিভাগে ইতোমধ্যে আমরা কথা বলেছি। তারা আমাদের কাছ থেকে ওয়াসা প্রতিষ্ঠার প্রকল্প চেয়েছে, এটি দিলেই কার্যক্রম শুরু করা যাবে।