ঢাকা ০২:৪০ এএম, রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘তৃতীয় গোলকিপারের’ নৈপুণ্যে ফাইনালে মরক্কো, তাদের সঙ্গী আর্জেন্টিনা

সবুজবাংলা টিভি ডটকম-
  • প্রকাশকাল ০৭:২৭:৩৯ এএম, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫ ৪ পাঠক
সবুজবাংলা টিভি এর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ফিফা অনূর্ধ্ব–২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে আর্জেন্টিনা ও মরক্কো। গতকাল রাতে সেমিফাইনালের দুই ম্যাচে নাটকীয়ভাবে জয় তুলে নেয় দুই দল।

কলম্বিয়াকে হারিয়ে ফাইনালে আগে জায়গা নিশ্চিত করে আর্জেন্টিনা, আর কিছুক্ষণ পর টাইব্রেকারের রোমাঞ্চে ইতিহাস গড়ে ফাইনালের টিকিট কেটে নেয় মরক্কো।

 

কলম্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলেছিল লিওনেল মেসির উত্তরসূরিরা। প্রথমার্ধেই গোলের দেখা পায় আর্জেন্টিনা। ম্যাচের ৭২তম মিনিটে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন ইন্টার মায়ামির তরুণ উইঙ্গার মাতেও সিলভেতি। ১৯ বছর বয়সী এই ফুটবলার কয়েকদিন আগেই আলোচনায় এসেছিলেন, যখন ইন্টার মায়ামির এক ম্যাচে মেসি নিজে না নিয়ে পেনাল্টির সুযোগ দিয়েছিলেন তাকে। সেদিন ব্যর্থ হলেও এবার সেমিফাইনালের মঞ্চে গোল করে দলকে ফাইনালে তোলেন এই তরুণ।

আর্জেন্টিনার এই জয় তাদের সামনে খুলে দিয়েছে রেকর্ড বাড়ানোর সুযোগ। যুব বিশ্বকাপে ইতোমধ্যে ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন তারা, তবে সর্বশেষ ট্রফি জিতেছিল ২০০৭ সালে। ২০০৫ সালে একই টুর্নামেন্টে লিওনেল মেসির নেতৃত্বে দলটি জিতেছিল ট্রফি, আর সেই আসরেই মেসি হয়েছিলেন সর্বোচ্চ গোলদাতা (৬) ও সেরা খেলোয়াড়।

পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল এবার গ্রুপ পর্বেই বিদায় নেয়, আর সেই একই গ্রুপে ব্রাজিল ও স্পেনকে টপকে সেরা হয়ে ওঠে মরক্কো। রাতের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ইতিহাস রচনা করে আফ্রিকার দলটি। ফ্রান্সের বিপক্ষে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ের খেলা শেষ হয় ১-১ সমতায়। টাইব্রেকারে ৫-৪ গোলে জয় পেয়ে প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠে মরক্কো।

মরক্কোর ম্যাচে নাটকীয়তার অভাব ছিল না। ৬৪তম মিনিটে প্রথম পছন্দের গোলরক্ষক ইয়াসিন বেঞ্চাউচ চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন। তার বদলে নামানো হয় ইব্রাহিম গোমিসকে। কিন্তু টাইব্রেকারের ঠিক আগে কোচ সাহসী সিদ্ধান্ত নেন। বেঞ্চ থেকে নামান তৃতীয় পছন্দের গোলকিপার আব্দেলহাকিম এল মেসবাহিকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই সিদ্ধান্ত হয়ে যায় ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট।

মেসবাহির হাতে থাকা পানির বোতলে ফ্রান্সের খেলোয়াড়দের মুখ ও তাদের সম্ভাব্য শট নেওয়ার দিক নির্দেশ করা ছিল গ্রাফিক্স আকারে। ঠিক সেভাবেই শেষ শটটি ঠেকিয়ে মরক্কোকে ফাইনালে তোলেন এই ২০ বছর বয়সী গোলরক্ষক, যিনি এর আগে আসরে এক মিনিটও খেলেননি। মাঠে নামার কয়েক মিনিট পরই হয়ে যান নায়ক।

২০০৫ সালের আসরে মরক্কোর সর্বোচ্চ সাফল্য ছিল চতুর্থ স্থান। এবার সেই সীমা পেরিয়ে পৌঁছে গেছে ইতিহাসের ফাইনালে। রোববার তারা মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনার, যাদের হাতে আছে রেকর্ড ছয়টি শিরোপা।

মরক্কোর সামনে সুযোগ ইতিহাস নতুন করে লেখার, আর আর্জেন্টিনার সামনে সুযোগ রেকর্ড আরও সমৃদ্ধ করার। ফাইনালটা তাই হতে যাচ্ছে তারুণ্যের এক অনন্য লড়াই।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

‘তৃতীয় গোলকিপারের’ নৈপুণ্যে ফাইনালে মরক্কো, তাদের সঙ্গী আর্জেন্টিনা

প্রকাশকাল ০৭:২৭:৩৯ এএম, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

ফিফা অনূর্ধ্ব–২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে আর্জেন্টিনা ও মরক্কো। গতকাল রাতে সেমিফাইনালের দুই ম্যাচে নাটকীয়ভাবে জয় তুলে নেয় দুই দল।

কলম্বিয়াকে হারিয়ে ফাইনালে আগে জায়গা নিশ্চিত করে আর্জেন্টিনা, আর কিছুক্ষণ পর টাইব্রেকারের রোমাঞ্চে ইতিহাস গড়ে ফাইনালের টিকিট কেটে নেয় মরক্কো।

 

কলম্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলেছিল লিওনেল মেসির উত্তরসূরিরা। প্রথমার্ধেই গোলের দেখা পায় আর্জেন্টিনা। ম্যাচের ৭২তম মিনিটে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন ইন্টার মায়ামির তরুণ উইঙ্গার মাতেও সিলভেতি। ১৯ বছর বয়সী এই ফুটবলার কয়েকদিন আগেই আলোচনায় এসেছিলেন, যখন ইন্টার মায়ামির এক ম্যাচে মেসি নিজে না নিয়ে পেনাল্টির সুযোগ দিয়েছিলেন তাকে। সেদিন ব্যর্থ হলেও এবার সেমিফাইনালের মঞ্চে গোল করে দলকে ফাইনালে তোলেন এই তরুণ।

আর্জেন্টিনার এই জয় তাদের সামনে খুলে দিয়েছে রেকর্ড বাড়ানোর সুযোগ। যুব বিশ্বকাপে ইতোমধ্যে ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন তারা, তবে সর্বশেষ ট্রফি জিতেছিল ২০০৭ সালে। ২০০৫ সালে একই টুর্নামেন্টে লিওনেল মেসির নেতৃত্বে দলটি জিতেছিল ট্রফি, আর সেই আসরেই মেসি হয়েছিলেন সর্বোচ্চ গোলদাতা (৬) ও সেরা খেলোয়াড়।

পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল এবার গ্রুপ পর্বেই বিদায় নেয়, আর সেই একই গ্রুপে ব্রাজিল ও স্পেনকে টপকে সেরা হয়ে ওঠে মরক্কো। রাতের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ইতিহাস রচনা করে আফ্রিকার দলটি। ফ্রান্সের বিপক্ষে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ের খেলা শেষ হয় ১-১ সমতায়। টাইব্রেকারে ৫-৪ গোলে জয় পেয়ে প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠে মরক্কো।

মরক্কোর ম্যাচে নাটকীয়তার অভাব ছিল না। ৬৪তম মিনিটে প্রথম পছন্দের গোলরক্ষক ইয়াসিন বেঞ্চাউচ চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন। তার বদলে নামানো হয় ইব্রাহিম গোমিসকে। কিন্তু টাইব্রেকারের ঠিক আগে কোচ সাহসী সিদ্ধান্ত নেন। বেঞ্চ থেকে নামান তৃতীয় পছন্দের গোলকিপার আব্দেলহাকিম এল মেসবাহিকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই সিদ্ধান্ত হয়ে যায় ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট।

মেসবাহির হাতে থাকা পানির বোতলে ফ্রান্সের খেলোয়াড়দের মুখ ও তাদের সম্ভাব্য শট নেওয়ার দিক নির্দেশ করা ছিল গ্রাফিক্স আকারে। ঠিক সেভাবেই শেষ শটটি ঠেকিয়ে মরক্কোকে ফাইনালে তোলেন এই ২০ বছর বয়সী গোলরক্ষক, যিনি এর আগে আসরে এক মিনিটও খেলেননি। মাঠে নামার কয়েক মিনিট পরই হয়ে যান নায়ক।

২০০৫ সালের আসরে মরক্কোর সর্বোচ্চ সাফল্য ছিল চতুর্থ স্থান। এবার সেই সীমা পেরিয়ে পৌঁছে গেছে ইতিহাসের ফাইনালে। রোববার তারা মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনার, যাদের হাতে আছে রেকর্ড ছয়টি শিরোপা।

মরক্কোর সামনে সুযোগ ইতিহাস নতুন করে লেখার, আর আর্জেন্টিনার সামনে সুযোগ রেকর্ড আরও সমৃদ্ধ করার। ফাইনালটা তাই হতে যাচ্ছে তারুণ্যের এক অনন্য লড়াই।