বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মালয়েশিয়া দীর্ঘদিন ধরেই জনপ্রিয় গন্তব্য। ভালো বেতন কাঠামো, আরামদায়ক আবহাওয়া ও উন্নত জীবনমানের কারণে দেশটিতে কর্মসংস্থানের আগ্রহ সবসময়ই বেশি। বর্তমানে মালয়েশিয়ায় প্রায় ১০ লাখ বাংলাদেশি বিভিন্ন খাতে কাজ করছেন। সবশেষ বছরখানেক আগেও কলিং ভিসায় প্রায় পৌনে ৫ লাখ বাংলাদেশি দেশটিতে পাড়ি জমান। তবে সিন্ডিকেটের দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে গত বছরের ৩১ মে বাংলাদেশের জন্য বন্ধ হয়ে যায় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। একাধিকবার বৈঠক করেও এখন পর্যন্ত দেশটির শ্রমবাজার চালু করতে পারেনি অন্তর্বর্তী সরকার। বাজারটি চালু হওয়ার পর আবার যাতে সিন্ডিকেটের দখলে না যায় এবং সব রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য উন্মুক্ত থাকে, তা নিয়ে মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। দীর্ঘদিনের আলোচনার পর সম্প্রতি এ বিষয়ে নজর দিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার। তবে সবার জন্য উন্মুক্ত না করলেও যেসব রিক্রুটিং এজেন্সি মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে চায়, তাদের জন্য ১০টি শর্ত জুড়ে দিয়েছে মালয়েশিয়া। এসব শর্তের মধ্যে রয়েছে-ন্যূনতম ৫ বছর সন্তোষজনক কার্যক্রম পরিচালনার অভিজ্ঞতা; অন্তত ৩ হাজার কর্মী পাঠানোর প্রমাণ; তিনটি ভিন্ন দেশে কর্মী পাঠানো ও কর্মসংস্থানের অভিজ্ঞতা এবং ১০ হাজার বর্গফুট আয়তনের স্থায়ী অফিস থাকতে হবে। জনশক্তি রপ্তানিকারকরা বলছেন, মালয়েশিয়া যেসব শর্ত দিয়েছে, বেশির ভাগ এজেন্সিই পূরণ করতে পারবে না। কারণ, বিগত সময়ে সিন্ডিকেটভুক্ত এজেন্সিগুলোই কেবল ৩ হাজারের বেশি কর্মী পাঠাতে পেরেছে। এর বাইরে অনেক অভিজ্ঞ এজেন্সিও এই শর্ত পূরণ করতে পারবে না। আর রিক্রুটিং এজেন্সির অফিস কত স্কয়ার ফুট হবে, সেটা মালয়েশিয়া নয় বরং বাংলাদেশ সরকার নির্ধারণ করবে। মালয়েশিয়ার এই শর্তগুলো মূলত পুরোনো সিন্ডিকেটের প্রভাবেই তৈরি করা হয়েছে। এ বিষয়ে সরকারের হস্তক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি।
