ঢাকা ০৩:৩৯ পিএম, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাবা জামায়াতের প্রার্থী, ছেলে ভোট চাইলেন বিএনপি প্রার্থীর

সবুজবাংলা টিভি ডটকম-
  • প্রকাশকাল ০৬:৫১:০৫ এএম, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫ ১ পাঠক
সবুজবাংলা টিভি এর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
বাবা জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী, আর ছেলে ভোট চাইলেন বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে। ছেলের বক্তব্যের ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সৃষ্টি হয় সমালোচনার ঝড় উঠে। আর এর মাঝেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বাবার পোস্ট যেন আগুনে ঘি ঢালার মতো ঘটনার সৃষ্টি করেছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত ৭ নভেম্বর বরিশালের গৌরনদীতে বিপ্লব ও সংহতি দিবসের জনসভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক স্কুল বিষয়ক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক (বরিশাল-১ আসনের জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী হাফেজ মাওলানা মো. কামরুল ইসলাম খানের ছেলে) আরাফাত বিল্লাহ খান।

ওইসময় তিনি তার বক্তব্যে বলেন, আমার বাবা মাওলানা কামরুল ইসলাম খান জামায়াতে ইসলামী থেকে বরিশাল-১ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন। আপনারা আমাকে চেনেন, আমি দীর্ঘ ২৫ বছর এ বিএনপির রাজনীতি করি। আমি ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা এবং যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা।

আমি এ বিএনপিকে জেনে শুনে ভালোবাসি, জেনে শুনে, বুঝে রাজনীতি করি। ২০১৮ সালে স্বপন (বরিশাল-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী জহির উদ্দিন স্বপন) ভাইয়ের বাসা থেকে গ্রেপ্তার হয়েছিলাম। আমি আপনাদের সামনে দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই, আমি আমার জীবনের শেষ পর্যন্ত ইনশাল্লাহ এই জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাস করবো, এখানেই থাকবো, এর বাইরে আমার কোনো ঠিকানা নেই।

ওইসময় উপস্থিতিদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, যদি আপনাদের কেউ বলে আপনারা যেই বিমানে উঠেছেন সেই বিমানের পাইলট ইউটিউব দেখে বিমান চালানো শিখেছে, আপনারা কি সেই বিমানে ভ্রমণ করবেন? কেন করবেন না, তার কারণ বিমানের পাইলটের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই, অভিজ্ঞতা নেই। আমাদের স্বপন ভাই দুই দুইবারের এমপি। তার পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে। সুতরাং আমরা আমাদের সুরক্ষার স্বার্থে অবশ্যই স্বপন ভাইয়ের পাশে থাকবো এবং তাকে বিজয়ী করবো।

অপরদিকে, এ ঘটনার পর ৮ নভেম্বর জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী হাফেজ মাওলানা মো. কামরুল ইসলাম খান নিজের ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছেন। সেই পোস্টে তিনি লেখেন, “আমাকে পিতা পরিচয় দিয়ে ৭ নভেম্বর গৌরনদী পাইলট স্কুল মাঠে বিএনপির পক্ষ নিয়ে যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে তাতে কেউ হতাশ হবেন না। আমি আজ চিকিৎসা শেষে ঢাকা থেকে বাসায় ফিরে দুই উপজেলার আমির, আসন পরিচালক ও অন্যান্য নেতাদেরকে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেব, ইনশাল্লাহ। আমরা যখন দাঁড়িপাল্লা মার্কা নিয়ে মাঠে নেমেছি, বিজয়ের মালা জামায়াতে ইসলামীর হবেই হবে”।

তবে এর পরে আরও একটি পোস্ট তিনি দিলেও সেটি পরে ডিলেটে করে দেন বলে অভিযোগ ওঠে। যদিও ডিলেট করা সেই পোস্টের স্ক্রিনশট আবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে জামায়াত ও বিএনপির সমর্থকদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাল্টাপাল্টি কমেন্টের ঝড় বইছে ফেসবুকে।

সমালোচকদের কাছ থেকে পাওয়া ডিলেট করা ওই পোস্টে তিনি লিখেছিলেন-“আমার বড় ছেলে আরাফাতকে শিবির করার জন্য অনেক বুঝিয়েছি, অনেক চাপ সৃষ্টি করেছি কিন্তু ব্যর্থ হয়েছি। তাকে দিয়ে শিবির করাতে পারিনি। আমি একজন ব্যর্থ পিতা। আমার বড় ছেলের সঙ্গে আমি সম্পর্ক ছিন্ন করলাম। জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীর বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়ার জন্য”।

ফেসবুক পোস্টের সত্যতা নিশ্চিত করে জামায়েত ইসলামীর প্রার্থী হাফেজ মাওলানা মো. কামরুল ইসলাম খান জানিয়েছেন, কেন্দ্রের নির্দেশে প্রথম পোস্টটি ডিলেট করেছি।

তবে তিনি আরও জানিয়েছেন, আমার ছেলে বক্তব্যে যাই বলুক না কেন তাতে ভোটে কোনো প্রভাব পড়বে না।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

বাবা জামায়াতের প্রার্থী, ছেলে ভোট চাইলেন বিএনপি প্রার্থীর

প্রকাশকাল ০৬:৫১:০৫ এএম, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫
বাবা জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী, আর ছেলে ভোট চাইলেন বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে। ছেলের বক্তব্যের ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সৃষ্টি হয় সমালোচনার ঝড় উঠে। আর এর মাঝেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বাবার পোস্ট যেন আগুনে ঘি ঢালার মতো ঘটনার সৃষ্টি করেছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত ৭ নভেম্বর বরিশালের গৌরনদীতে বিপ্লব ও সংহতি দিবসের জনসভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক স্কুল বিষয়ক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক (বরিশাল-১ আসনের জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী হাফেজ মাওলানা মো. কামরুল ইসলাম খানের ছেলে) আরাফাত বিল্লাহ খান।

ওইসময় তিনি তার বক্তব্যে বলেন, আমার বাবা মাওলানা কামরুল ইসলাম খান জামায়াতে ইসলামী থেকে বরিশাল-১ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন। আপনারা আমাকে চেনেন, আমি দীর্ঘ ২৫ বছর এ বিএনপির রাজনীতি করি। আমি ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা এবং যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা।

আমি এ বিএনপিকে জেনে শুনে ভালোবাসি, জেনে শুনে, বুঝে রাজনীতি করি। ২০১৮ সালে স্বপন (বরিশাল-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী জহির উদ্দিন স্বপন) ভাইয়ের বাসা থেকে গ্রেপ্তার হয়েছিলাম। আমি আপনাদের সামনে দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই, আমি আমার জীবনের শেষ পর্যন্ত ইনশাল্লাহ এই জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাস করবো, এখানেই থাকবো, এর বাইরে আমার কোনো ঠিকানা নেই।

ওইসময় উপস্থিতিদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, যদি আপনাদের কেউ বলে আপনারা যেই বিমানে উঠেছেন সেই বিমানের পাইলট ইউটিউব দেখে বিমান চালানো শিখেছে, আপনারা কি সেই বিমানে ভ্রমণ করবেন? কেন করবেন না, তার কারণ বিমানের পাইলটের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই, অভিজ্ঞতা নেই। আমাদের স্বপন ভাই দুই দুইবারের এমপি। তার পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে। সুতরাং আমরা আমাদের সুরক্ষার স্বার্থে অবশ্যই স্বপন ভাইয়ের পাশে থাকবো এবং তাকে বিজয়ী করবো।

অপরদিকে, এ ঘটনার পর ৮ নভেম্বর জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী হাফেজ মাওলানা মো. কামরুল ইসলাম খান নিজের ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছেন। সেই পোস্টে তিনি লেখেন, “আমাকে পিতা পরিচয় দিয়ে ৭ নভেম্বর গৌরনদী পাইলট স্কুল মাঠে বিএনপির পক্ষ নিয়ে যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে তাতে কেউ হতাশ হবেন না। আমি আজ চিকিৎসা শেষে ঢাকা থেকে বাসায় ফিরে দুই উপজেলার আমির, আসন পরিচালক ও অন্যান্য নেতাদেরকে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেব, ইনশাল্লাহ। আমরা যখন দাঁড়িপাল্লা মার্কা নিয়ে মাঠে নেমেছি, বিজয়ের মালা জামায়াতে ইসলামীর হবেই হবে”।

তবে এর পরে আরও একটি পোস্ট তিনি দিলেও সেটি পরে ডিলেটে করে দেন বলে অভিযোগ ওঠে। যদিও ডিলেট করা সেই পোস্টের স্ক্রিনশট আবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে জামায়াত ও বিএনপির সমর্থকদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাল্টাপাল্টি কমেন্টের ঝড় বইছে ফেসবুকে।

সমালোচকদের কাছ থেকে পাওয়া ডিলেট করা ওই পোস্টে তিনি লিখেছিলেন-“আমার বড় ছেলে আরাফাতকে শিবির করার জন্য অনেক বুঝিয়েছি, অনেক চাপ সৃষ্টি করেছি কিন্তু ব্যর্থ হয়েছি। তাকে দিয়ে শিবির করাতে পারিনি। আমি একজন ব্যর্থ পিতা। আমার বড় ছেলের সঙ্গে আমি সম্পর্ক ছিন্ন করলাম। জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীর বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়ার জন্য”।

ফেসবুক পোস্টের সত্যতা নিশ্চিত করে জামায়েত ইসলামীর প্রার্থী হাফেজ মাওলানা মো. কামরুল ইসলাম খান জানিয়েছেন, কেন্দ্রের নির্দেশে প্রথম পোস্টটি ডিলেট করেছি।

তবে তিনি আরও জানিয়েছেন, আমার ছেলে বক্তব্যে যাই বলুক না কেন তাতে ভোটে কোনো প্রভাব পড়বে না।