ঢাকা ০১:১৭ পিএম, রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ট্রাম্পকে ‘শান্তি পুরস্কার’ দেওয়ায় ফিফার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন

সবুজবাংলা টিভি ডটকম-
  • প্রকাশকাল ০৫:২০:২১ এএম, শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ৪ পাঠক
সবুজবাংলা টিভি এর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
‘শান্তি পুরস্কার’ নামে নতুন এক বার্ষিক পুরস্কার দেওয়ার রীতি চালু করেছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ফিফা। প্রথমবার এই পুরস্কার পেলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০২৬ বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠানে ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো ট্রাম্পের হাতে ফিফা শান্তি পুরস্কার তুলে দিয়েছেন।

ফিফা সভাপতি ইনফান্তিনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রশংসায় ভাসিয়ে দিয়েছেন, আর সমালোচকরা নতুন করে চালু করা এই শান্তি পুরস্কারকে বলেছেন ‘অশ্লীল’।

খেলোয়াড়রা রাজনৈতিক বার্তা প্রদর্শনের কারণে প্রায়ই ফিফার জরিমানা বা নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েন। কারণ ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক নিরপেক্ষতার নীতি বজায় রাখার কথা বলে এসেছে।

কিন্তু শুক্রবার, ফিফার প্রধান জিয়ান্নি ইনফান্তিনো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাতে প্রথমবারের মতো ফিফা শান্তি পুরস্কার তুলে দেন, যা রিপাবলিকান নেতার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতাকেই আরও দৃঢ় করেছে।

সমালোচকরা উল্লেখ করেছেন, পুরস্কার দেওয়ার ২৪ ঘণ্টারও কম সময় আগে ট্রাম্প প্রশাসন ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে আরেকটি প্রাণঘাতী বিমান হামলা চালিয়েছে।

গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার কারণে দেশটিকে বিশ্ব ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে প্রচার চালিয়ে আসা জাতিসংঘের সাবেক কর্মকর্তা ক্রেইগ মোকহিবার এই পুরস্কারকে বলেছেন ‘অত্যন্ত লজ্জাজনক ঘটনা’।

ইনফান্তিনো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেছেন, ফুটবল ‘ভূ-রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান করতে পারে না’।

মোকহিবার আল জাজিরাকে বলেন, “ফিলিস্তিনে গণহত্যায় দুই বছর ধরে ফিফার সহযোগিতায় সন্তুষ্ট না হয়ে ইনফান্তিনো ও তার সঙ্গীরা এখন ট্রাম্পকে খুশি করতে নতুন একটি ‘শান্তি পুরস্কার’ উদ্ভাবন করেছেন।”

তিনি আরও বলেন, এই পুরস্কারের উদ্দেশ্য হলো ইসরায়েলকে ট্রাম্পের দৃঢ় সমর্থন, ক্যারিবীয় সাগরে প্রাণঘাতী হামলা এবং যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন’—এসবকে আড়াল করা।

ট্রাম্পের ভূয়সী প্রশংসা ইনফান্তিনোর
শুক্রবার পুরস্কার প্রদানকালে ইনফান্তিনো ট্রাম্পের আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলোর প্রশংসা করেন। যেমন ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’, যা ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রীয় মর্যাদার প্রশ্ন সমাধান না করেই ইসরায়েল ও কয়েকটি আরব দেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক স্থাপন করে।

ইনফান্তিনো বলেন, “আমরা একজন নেতার থেকে এটি-ই চাই: এমন একজন নেতা, যিনি মানুষকে গুরুত্ব দেন। আমরা নিরাপদ পৃথিবীতে বাঁচতে চাই, নিরাপদ পরিবেশে থাকতে চাই। আমরা ঐক্য চাই, যা আমরা আজ এখানে করছি এবং বিশ্বকাপে সেটিই করতে চাই।”

তিনি বলেন, “মিস্টার প্রেসিডেন্ট, আপনি অবশ্যই প্রথম ফিফা শান্তি পুরস্কারের যোগ্য—আপনার কাজের জন্য, আপনার সাফল্যের জন্য, যা আপনি সত্যিই অসাধারণভাবে অর্জন করেছেন।”

ট্রাম্প বহুবার নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য প্রচারণা চালিয়েছেন, তবে এ বছরও তিনি তা পাননি। নতুন ফিফা পুরস্কারকে তার পাওয়া সবচেয়ে বড় সম্মানগুলোর একটি উল্লেখ করে ট্রাম্প দাবি করেন যে, তিনি লাখো মানুষের জীবন বাঁচিয়েছেন এবং আটটি যুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছেন।

ফিফার পূর্বের অবস্থান থেকে সরে যাওয়া
ইনফান্তিনো অতীতে ফুটবলকে বিভাজনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার না করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। ২০২৩ সালে তিনি বলেছিলেন, মানুষকে একত্রিত করার জন্য খেলাধুলার মতো শক্তিশালী হাতিয়ার আর নেই। এখন আমাদের খেলাধুলার স্বায়ত্তশাসন রক্ষা করতে হবে, খেলাধুলার রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা রক্ষা করতে হবে।

দুই বছর পর সমালোচকরা বলছেন, ইনফান্তিনো একদিকে শান্তি ও ঐক্য উদযাপনের জন্য পুরস্কার তৈরি করেছেন, আবার সেই পুরস্কার তুলে দিয়েছেন এমন একজন প্রেসিডেন্টকে, যিনি কয়েকদিন আগেই সোমালিয়ার মানুষদের ‘আবর্জনা’ বলেছেন।

ফুটবল সাংবাদিক জ্যাক লোই সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, “ডোনাল্ড ট্রাম্পকে শান্তির পুরস্কার দেওয়া ঠিক লুইস সুয়ারেজকে মানুষ না কামড়ানোর জন্য পুরস্কার দেওয়ার মতো।” উরুগুইয়ান ফরোয়ার্ডের তিনটি কামড়ানোর ঘটনাকে ইঙ্গিত করেছেন এই সাংবাদিক।

ডেমোক্র্যাটিক পার্টি এই নতুন ফিফা পুরস্কারকে তীব্র সমালোচনা করেছে। তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্টে বলা হয়, “ট্রাম্প নোবেল শান্তি পুরস্কার জিততে পারেননি, তাই ফিফা তার জন্য একটা বানিয়ে ফেলল!”

ট্রাম্পের রেকর্ড
যদিও ট্রাম্প কিছু শান্তিচুক্তি মধ্যস্থতা করেছেন, সম্প্রতি রুয়ান্ডা ও কঙ্গোর মধ্যে। তিনি পশ্চিমা বিশ্বে সামরিক ব্যয় বাড়ানোর অন্যতম জোরালো সমর্থক।

ট্রাম্প জুন মাসে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলার নির্দেশ দেন এবং ইসরায়েল তার নথিভুক্ত মানবাধিকার লঙ্ঘন সত্ত্বেও তিনি দেশটিকে অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রেখেছেন।

পশ্চিম গোলার্ধে তার প্রশাসন ২২টি বিমান হামলা চালিয়েছে কথিত মাদকবাহী নৌযানের ওপর, যাতে কমপক্ষে ৮৬ জন নিহত হয়েছে। আইন বিশেষজ্ঞরা এসব হামলাকে অবৈধ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হিসেবে নিন্দা করেছেন।

এ ছাড়া, ভেনেজুয়েলার সীমানা ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে, যা বামপন্থি প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সম্ভাব্য যুদ্ধের গুঞ্জন তুলছে।

দেশের অভ্যন্তরে ট্রাম্প অভিবাসনবিরোধী অভিযানে কঠোরতা বাড়িয়েছেন, যার ফলে অনেককে আটক ও বহিষ্কারের চেষ্টা চলছে। ইসরায়েলের সমালোচনা করায় কিছু মানবাধিকারকর্মীকে লক্ষ্য করা হয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনীতে সুরক্ষিত মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অন্তর্ভুক্ত।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, ট্রাম্পকে সদ্য তৈরি করা ‘শান্তি পুরস্কার’ দিয়েছে ফিফা। কিন্তু তার প্রশাসনের ভয়াবহ মানবাধিকার রেকর্ড কোনোভাবেই শান্তি ও ঐক্যের অসাধারণ কাজ প্রদর্শন করে না।

পুরস্কার প্রত্যাহারের দাবি
জাতিসংঘের সাবেক কর্মকর্তা মোকহিবার বলেন, “এই অশ্লীল পুরস্কার অবশ্যই প্রত্যাহার করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “ফিফার নিয়ম অনুযায়ী কাদামাটির মাঠে খেলা যায় না। রক্তাক্ত মাঠে খেলার তো প্রশ্নই ওঠে না, কিন্তু ইনফান্তিনো ফিফাকে সেদিকেই নিয়ে যাচ্ছেন।”

সূত্র: আল জাজিরা

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

ট্রাম্পকে ‘শান্তি পুরস্কার’ দেওয়ায় ফিফার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন

প্রকাশকাল ০৫:২০:২১ এএম, শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫
‘শান্তি পুরস্কার’ নামে নতুন এক বার্ষিক পুরস্কার দেওয়ার রীতি চালু করেছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ফিফা। প্রথমবার এই পুরস্কার পেলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০২৬ বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠানে ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো ট্রাম্পের হাতে ফিফা শান্তি পুরস্কার তুলে দিয়েছেন।

ফিফা সভাপতি ইনফান্তিনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রশংসায় ভাসিয়ে দিয়েছেন, আর সমালোচকরা নতুন করে চালু করা এই শান্তি পুরস্কারকে বলেছেন ‘অশ্লীল’।

খেলোয়াড়রা রাজনৈতিক বার্তা প্রদর্শনের কারণে প্রায়ই ফিফার জরিমানা বা নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েন। কারণ ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক নিরপেক্ষতার নীতি বজায় রাখার কথা বলে এসেছে।

কিন্তু শুক্রবার, ফিফার প্রধান জিয়ান্নি ইনফান্তিনো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাতে প্রথমবারের মতো ফিফা শান্তি পুরস্কার তুলে দেন, যা রিপাবলিকান নেতার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতাকেই আরও দৃঢ় করেছে।

সমালোচকরা উল্লেখ করেছেন, পুরস্কার দেওয়ার ২৪ ঘণ্টারও কম সময় আগে ট্রাম্প প্রশাসন ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে আরেকটি প্রাণঘাতী বিমান হামলা চালিয়েছে।

গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার কারণে দেশটিকে বিশ্ব ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে প্রচার চালিয়ে আসা জাতিসংঘের সাবেক কর্মকর্তা ক্রেইগ মোকহিবার এই পুরস্কারকে বলেছেন ‘অত্যন্ত লজ্জাজনক ঘটনা’।

ইনফান্তিনো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেছেন, ফুটবল ‘ভূ-রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান করতে পারে না’।

মোকহিবার আল জাজিরাকে বলেন, “ফিলিস্তিনে গণহত্যায় দুই বছর ধরে ফিফার সহযোগিতায় সন্তুষ্ট না হয়ে ইনফান্তিনো ও তার সঙ্গীরা এখন ট্রাম্পকে খুশি করতে নতুন একটি ‘শান্তি পুরস্কার’ উদ্ভাবন করেছেন।”

তিনি আরও বলেন, এই পুরস্কারের উদ্দেশ্য হলো ইসরায়েলকে ট্রাম্পের দৃঢ় সমর্থন, ক্যারিবীয় সাগরে প্রাণঘাতী হামলা এবং যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন’—এসবকে আড়াল করা।

ট্রাম্পের ভূয়সী প্রশংসা ইনফান্তিনোর
শুক্রবার পুরস্কার প্রদানকালে ইনফান্তিনো ট্রাম্পের আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলোর প্রশংসা করেন। যেমন ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’, যা ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রীয় মর্যাদার প্রশ্ন সমাধান না করেই ইসরায়েল ও কয়েকটি আরব দেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক স্থাপন করে।

ইনফান্তিনো বলেন, “আমরা একজন নেতার থেকে এটি-ই চাই: এমন একজন নেতা, যিনি মানুষকে গুরুত্ব দেন। আমরা নিরাপদ পৃথিবীতে বাঁচতে চাই, নিরাপদ পরিবেশে থাকতে চাই। আমরা ঐক্য চাই, যা আমরা আজ এখানে করছি এবং বিশ্বকাপে সেটিই করতে চাই।”

তিনি বলেন, “মিস্টার প্রেসিডেন্ট, আপনি অবশ্যই প্রথম ফিফা শান্তি পুরস্কারের যোগ্য—আপনার কাজের জন্য, আপনার সাফল্যের জন্য, যা আপনি সত্যিই অসাধারণভাবে অর্জন করেছেন।”

ট্রাম্প বহুবার নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য প্রচারণা চালিয়েছেন, তবে এ বছরও তিনি তা পাননি। নতুন ফিফা পুরস্কারকে তার পাওয়া সবচেয়ে বড় সম্মানগুলোর একটি উল্লেখ করে ট্রাম্প দাবি করেন যে, তিনি লাখো মানুষের জীবন বাঁচিয়েছেন এবং আটটি যুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছেন।

ফিফার পূর্বের অবস্থান থেকে সরে যাওয়া
ইনফান্তিনো অতীতে ফুটবলকে বিভাজনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার না করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। ২০২৩ সালে তিনি বলেছিলেন, মানুষকে একত্রিত করার জন্য খেলাধুলার মতো শক্তিশালী হাতিয়ার আর নেই। এখন আমাদের খেলাধুলার স্বায়ত্তশাসন রক্ষা করতে হবে, খেলাধুলার রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা রক্ষা করতে হবে।

দুই বছর পর সমালোচকরা বলছেন, ইনফান্তিনো একদিকে শান্তি ও ঐক্য উদযাপনের জন্য পুরস্কার তৈরি করেছেন, আবার সেই পুরস্কার তুলে দিয়েছেন এমন একজন প্রেসিডেন্টকে, যিনি কয়েকদিন আগেই সোমালিয়ার মানুষদের ‘আবর্জনা’ বলেছেন।

ফুটবল সাংবাদিক জ্যাক লোই সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, “ডোনাল্ড ট্রাম্পকে শান্তির পুরস্কার দেওয়া ঠিক লুইস সুয়ারেজকে মানুষ না কামড়ানোর জন্য পুরস্কার দেওয়ার মতো।” উরুগুইয়ান ফরোয়ার্ডের তিনটি কামড়ানোর ঘটনাকে ইঙ্গিত করেছেন এই সাংবাদিক।

ডেমোক্র্যাটিক পার্টি এই নতুন ফিফা পুরস্কারকে তীব্র সমালোচনা করেছে। তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্টে বলা হয়, “ট্রাম্প নোবেল শান্তি পুরস্কার জিততে পারেননি, তাই ফিফা তার জন্য একটা বানিয়ে ফেলল!”

ট্রাম্পের রেকর্ড
যদিও ট্রাম্প কিছু শান্তিচুক্তি মধ্যস্থতা করেছেন, সম্প্রতি রুয়ান্ডা ও কঙ্গোর মধ্যে। তিনি পশ্চিমা বিশ্বে সামরিক ব্যয় বাড়ানোর অন্যতম জোরালো সমর্থক।

ট্রাম্প জুন মাসে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলার নির্দেশ দেন এবং ইসরায়েল তার নথিভুক্ত মানবাধিকার লঙ্ঘন সত্ত্বেও তিনি দেশটিকে অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রেখেছেন।

পশ্চিম গোলার্ধে তার প্রশাসন ২২টি বিমান হামলা চালিয়েছে কথিত মাদকবাহী নৌযানের ওপর, যাতে কমপক্ষে ৮৬ জন নিহত হয়েছে। আইন বিশেষজ্ঞরা এসব হামলাকে অবৈধ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হিসেবে নিন্দা করেছেন।

এ ছাড়া, ভেনেজুয়েলার সীমানা ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে, যা বামপন্থি প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সম্ভাব্য যুদ্ধের গুঞ্জন তুলছে।

দেশের অভ্যন্তরে ট্রাম্প অভিবাসনবিরোধী অভিযানে কঠোরতা বাড়িয়েছেন, যার ফলে অনেককে আটক ও বহিষ্কারের চেষ্টা চলছে। ইসরায়েলের সমালোচনা করায় কিছু মানবাধিকারকর্মীকে লক্ষ্য করা হয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনীতে সুরক্ষিত মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অন্তর্ভুক্ত।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, ট্রাম্পকে সদ্য তৈরি করা ‘শান্তি পুরস্কার’ দিয়েছে ফিফা। কিন্তু তার প্রশাসনের ভয়াবহ মানবাধিকার রেকর্ড কোনোভাবেই শান্তি ও ঐক্যের অসাধারণ কাজ প্রদর্শন করে না।

পুরস্কার প্রত্যাহারের দাবি
জাতিসংঘের সাবেক কর্মকর্তা মোকহিবার বলেন, “এই অশ্লীল পুরস্কার অবশ্যই প্রত্যাহার করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “ফিফার নিয়ম অনুযায়ী কাদামাটির মাঠে খেলা যায় না। রক্তাক্ত মাঠে খেলার তো প্রশ্নই ওঠে না, কিন্তু ইনফান্তিনো ফিফাকে সেদিকেই নিয়ে যাচ্ছেন।”

সূত্র: আল জাজিরা