শনিবার (০৬ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ফার্মগেটে তুলা উন্নয়ন ভবনে আয়োজিত এক জাতীয় সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। দেশের মানুষের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতের পাশাপাশি তাদের ক্রেতা অধিকার প্রতিষ্ঠায় ক্ষমতায়ন বৃদ্ধির লক্ষ্যে একসাথে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এবং বাংলাদেশ সেফ অ্যাগ্রো ফুড ইফোর্টস (বিএসএএফই)।
মারাত্মকভাবে বাড়ছে ভোক্তা অধিকার লঙ্ঘন
- প্রকাশকাল ০৪:৩২:৪৪ এএম, রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ৩ পাঠক
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, দেশে নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ ও ভোক্তা অধিকার সুরক্ষা এখন জরুরি জাতীয় অগ্রাধিকার। কারণ, প্রতিবছর প্রায় তিন কোটি মানুষ খাদ্যবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে। বাজারে ভেজাল, বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন, অনিরাপদ পণ্য এবং অনলাইন প্রতারণার অভিযোগ বাড়ছে। দেশে খাদ্য উৎপাদন ও বিপণন বেড়েছে, কিন্তু বাজারের ৭১ শতাংশ সবজিতে অতিরিক্ত কীটনাশক, তেলের নমুনায় বিপজ্জনক ট্রান্স–ফ্যাট এবং দুর্বল নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার কারণে জনস্বাস্থ্যের ওপর বড় ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
এসময় বক্তারা বলেন, আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী দলসমূহের নির্বাচনী ইশতেহারে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে কী করবেন তা সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরা প্রয়োজন। সরকারের নিয়ন্ত্রক সংস্থাসমূহের মধ্যে সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে এই খাতে গুণগত পরিবর্তন আনা সম্ভব। সরকারকে আরও নিবিড়ভাবে গবেষণা ও উপকরণ সহযোগিতায় ভূমিকা রাখতে হবে।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, দেশে দিন দিন জনসংখ্যা বাড়ছে, তাই খাদ্যের উৎপাদনও বাড়াতে হবে। কিন্তু এই উৎপাদন বাড়াতে গিয়ে আমরা রাসায়নিক সারের ওপর ঝুঁকে পড়ছি। কৃষকরা রাসায়নিক সারের ওপর এত বেশি নির্ভর হয়ে গেছে যে এখন আর কৃষিপণ্যের উৎপাদনই হচ্ছে না। অর্থাৎ মাটি তার উৎপাদন ক্ষমতাই হারিয়ে ফেলছে। উৎপাদন ক্ষমতা ঠিক রাখতে কৃষকদের রাসায়নিক সার বিমুখ করতে হবে এবং জৈব সার নির্ভর করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতের লক্ষ্যে আপনাদের (বিএসএএফই) সঙ্গে ক্যাব থাকবে। কারণ, ক্যাবের লক্ষ্য ভোক্তার জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা। ক্যাবের আন্দোলনের ফলেই জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর পেয়েছি। অথচ তারা (ভোক্তা অধিদপ্তরের প্রতিনিধি) এই আলোচনায় নেই, এটি দুঃখজনক। কিন্তু ক্যাব চায় সবাইকে নিয়ে নাগরিকদের ভোক্তা অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।
সেমিনারে উত্থাপিত মূল ধারণাপত্রে প্রস্তাব করা হয়: সকল অংশীজনের মধ্যে শক্তিশালী অংশীদারিত্ব জোরদার করা, খাদ্য বাজারে জবাবদিহি বাড়ানো, ভোক্তা সচেতনতা বৃদ্ধি ও অংশগ্রহণের সুযোগ বাড়ানো, গবেষণা ও প্রমাণভিত্তিক নীতিমালা প্রণয়ন, ডিজিটাল মাধ্যমে অভিযোগ জানানোর সুযোগ বৃদ্ধি ও প্রতিকার পাওয়া সহজ করা।
এছাড়া নিরাপদ খাদ্য নীতিমালা প্রণয়ন, ভোক্তা সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সহায়তা এবং টেকসই, পরিবেশবান্ধব ও জলবায়ু–সংবেদনশীল নীতিমালা অনুশীলন করা।

























