ঢাকা ০৯:২৯ এএম, বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘কোনো অ্যাওয়ার্ড পাইনি, মানুষের ভালোবাসাই আমার অ্যাওয়ার্ড’

সবুজবাংলা টিভি ডটকম-
  • প্রকাশকাল ০২:৩৩:০৫ এএম, বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ ২ পাঠক
সবুজবাংলা টিভি এর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
‘দোস্ত দুশমন’, ‘মাস্তান রাজা’, ‘কালিয়া’, ‘বারুদ’ প্রতিটি সিনেমা পেয়েছিল বাণিজ্যিক সফলতা। ১৯৭৬ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দোস্ত দুশমন’ সিনেমায় অভিনেতা জসিমের খল চরিত্র তুমুল সাড়া ফেলেছিল। জনপ্রিয় নায়ক রিয়াজও তার হাত ধরেই চলচ্চিত্রে পা রাখেন। তার নির্মিত অনেক সিনেমার গান আজও দর্শকদের মুখে মুখে। বলছি ঢাকাই চলচ্চিত্রের সোনালি দিনের অন্যতম সফল নির্মাতা-গীতিকার দেওয়ান নজরুলের কথা।

দীর্ঘ দুই দশক ধরে চলচ্চিত্র নির্মাণ থেকে দূরে আছেন এই গুণী নির্মাতা। তবে হৃদয়ের টানে মাঝেমধ্যে বিএফডিসিতে বেড়াতে আসেন তিনি। কিন্তু চিরচেনা জায়গায় এসে জাগে আক্ষেপ-স্মৃতির চেয়ে বিস্মৃতি যেন তাকে বেশি ঘিরে ধরে।

দেওয়ান নজরুল বলেন, আমাকে তো কেউ আর সেভাবে স্মরণ করেন না। এখনকার মিডিয়ার কেউই আমাকে তেমন চেনে না।

‘দোস্ত দুশমন’ ছিল দেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ অ্যাকশনধর্মী সিনেমার মধ্যে অন্যতম। এ বিষয়ে দেওয়ান নজরুল বলেন, তখন সিনেমাটির সেন্সর প্রিন্ট পর্যন্ত নির্মাণ ব্যয় ছিল ১২ লাখ টাকা। মুক্তির পর সারাদেশে দারুণ ব্যবসা করে। তখন সামাজিক বা পারিবারিক সিনেমা বেশি হতো। ‘দোস্ত দুশমন’ অ্যাকশন ধারার নতুন ট্রেন্ড তৈরি করে। চলচ্চিত্রে নতুন এক ডাইমেনশন আসে।

২০০৫ সালে সর্বশেষ ‘দোজখ’ সিনেমা নির্মাণ করেন দেওয়ান নজরুল। শুধু নির্মাতা নন, গীতিকার হিসেবেও ছিলেন সফল। তার লেখা চার শতাধিক গানের মধ্যে ‘চুমকি চলেছে একা পথে’, ‘চুপি চুপি বলো’, ‘পাখির বাসার মতো দুটি চোখ’, ‘দুনিয়াটা মস্ত বড়’, ‘নাচ আমার ময়না তুই’- এসব গান আজও শ্রোতাপ্রিয়। তার লেখা কয়েকটি গান বিবিসির জরিপে সর্বকালের সেরা বাংলা চলচ্চিত্রের গানের তালিকায় স্থান পেয়েছিল।

নিজের সৃজনশীলতা প্রসঙ্গে দেওয়ান নজরুল বলেন, তখন আমি সিনেমার দৃশ্য মাথায় রেখে গান লিখতাম। প্রতিটি গান ছিল আলাদা স্টাইলে।

কথা প্রসঙ্গে আসে প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির বিষয়। সেখানেই জমে থাকা অভিমান ঝরে পড়ে তার কণ্ঠে। দেওয়ান নজরুল বলেন, আমি আজ পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় কোনো অ্যাওয়ার্ড পাইনি। আমার করা ১৭টি সিনেমার প্রতিটিই পুরস্কারের যোগ্য ছিল। যারা অ্যাওয়ার্ড দেয় তারা হয়তো নিজেরাই জানে না কারা প্রকৃত প্রাপ্য।

খানিকটা আফসোস করে দেওয়ান নজরুল বলেন, আমার প্রতিটি সিনেমা ব্যবসা করেছে। দেশের সাধারণ মানুষ এসব সিনেমা দেখেছে। তারা আমাকে ভালোবেসেছে- এটাই আমার আসল পুরস্কার। শত শত গান লিখেছি; আজও মানুষ সেগুলো শোনে। মানুষের জন্য কাজ করেছি, মানুষের ভালোবাসাই আমার অ্যাওয়ার্ড।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

‘কোনো অ্যাওয়ার্ড পাইনি, মানুষের ভালোবাসাই আমার অ্যাওয়ার্ড’

প্রকাশকাল ০২:৩৩:০৫ এএম, বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
‘দোস্ত দুশমন’, ‘মাস্তান রাজা’, ‘কালিয়া’, ‘বারুদ’ প্রতিটি সিনেমা পেয়েছিল বাণিজ্যিক সফলতা। ১৯৭৬ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দোস্ত দুশমন’ সিনেমায় অভিনেতা জসিমের খল চরিত্র তুমুল সাড়া ফেলেছিল। জনপ্রিয় নায়ক রিয়াজও তার হাত ধরেই চলচ্চিত্রে পা রাখেন। তার নির্মিত অনেক সিনেমার গান আজও দর্শকদের মুখে মুখে। বলছি ঢাকাই চলচ্চিত্রের সোনালি দিনের অন্যতম সফল নির্মাতা-গীতিকার দেওয়ান নজরুলের কথা।

দীর্ঘ দুই দশক ধরে চলচ্চিত্র নির্মাণ থেকে দূরে আছেন এই গুণী নির্মাতা। তবে হৃদয়ের টানে মাঝেমধ্যে বিএফডিসিতে বেড়াতে আসেন তিনি। কিন্তু চিরচেনা জায়গায় এসে জাগে আক্ষেপ-স্মৃতির চেয়ে বিস্মৃতি যেন তাকে বেশি ঘিরে ধরে।

দেওয়ান নজরুল বলেন, আমাকে তো কেউ আর সেভাবে স্মরণ করেন না। এখনকার মিডিয়ার কেউই আমাকে তেমন চেনে না।

‘দোস্ত দুশমন’ ছিল দেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ অ্যাকশনধর্মী সিনেমার মধ্যে অন্যতম। এ বিষয়ে দেওয়ান নজরুল বলেন, তখন সিনেমাটির সেন্সর প্রিন্ট পর্যন্ত নির্মাণ ব্যয় ছিল ১২ লাখ টাকা। মুক্তির পর সারাদেশে দারুণ ব্যবসা করে। তখন সামাজিক বা পারিবারিক সিনেমা বেশি হতো। ‘দোস্ত দুশমন’ অ্যাকশন ধারার নতুন ট্রেন্ড তৈরি করে। চলচ্চিত্রে নতুন এক ডাইমেনশন আসে।

২০০৫ সালে সর্বশেষ ‘দোজখ’ সিনেমা নির্মাণ করেন দেওয়ান নজরুল। শুধু নির্মাতা নন, গীতিকার হিসেবেও ছিলেন সফল। তার লেখা চার শতাধিক গানের মধ্যে ‘চুমকি চলেছে একা পথে’, ‘চুপি চুপি বলো’, ‘পাখির বাসার মতো দুটি চোখ’, ‘দুনিয়াটা মস্ত বড়’, ‘নাচ আমার ময়না তুই’- এসব গান আজও শ্রোতাপ্রিয়। তার লেখা কয়েকটি গান বিবিসির জরিপে সর্বকালের সেরা বাংলা চলচ্চিত্রের গানের তালিকায় স্থান পেয়েছিল।

নিজের সৃজনশীলতা প্রসঙ্গে দেওয়ান নজরুল বলেন, তখন আমি সিনেমার দৃশ্য মাথায় রেখে গান লিখতাম। প্রতিটি গান ছিল আলাদা স্টাইলে।

কথা প্রসঙ্গে আসে প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির বিষয়। সেখানেই জমে থাকা অভিমান ঝরে পড়ে তার কণ্ঠে। দেওয়ান নজরুল বলেন, আমি আজ পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় কোনো অ্যাওয়ার্ড পাইনি। আমার করা ১৭টি সিনেমার প্রতিটিই পুরস্কারের যোগ্য ছিল। যারা অ্যাওয়ার্ড দেয় তারা হয়তো নিজেরাই জানে না কারা প্রকৃত প্রাপ্য।

খানিকটা আফসোস করে দেওয়ান নজরুল বলেন, আমার প্রতিটি সিনেমা ব্যবসা করেছে। দেশের সাধারণ মানুষ এসব সিনেমা দেখেছে। তারা আমাকে ভালোবেসেছে- এটাই আমার আসল পুরস্কার। শত শত গান লিখেছি; আজও মানুষ সেগুলো শোনে। মানুষের জন্য কাজ করেছি, মানুষের ভালোবাসাই আমার অ্যাওয়ার্ড।