ঢাকা ০৯:৪৬ এএম, বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া দেশ পুনর্গঠন সম্ভব নয়, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তারেক রহমান

সবুজবাংলা টিভি ডটকম-
  • প্রকাশকাল ০২:১৭:৩৬ এএম, বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ ১ পাঠক
সবুজবাংলা টিভি এর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
যেকোনো মূল্যে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অবসরপ্রাপ্ত সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।

সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, “যেকোনো মূল্যে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। কারণ দেশ পুনর্গঠনের পূর্ব শর্ত হলো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। গণতন্ত্র ফিরিয়ে না আনলে মানুষের ইচ্ছের প্রতিফলন ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনর্গঠন সম্ভব হবে না।”

দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তারেক রহমান অভিযোগ করেন যে, ডিফেন্সসহ বিভিন্ন খাতকে রাজনীতিকরণ করা হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “পতিত ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার দেশের প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে গেছে। সুতরাং আমাদের দায়িত্ব এই ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় গড়ে তোলা।”

অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “জনগণের ভোটে বিএনপি আগামীতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় গেলে আপনাদের মধ্যে যোগ্যদের খুঁজে বের করে দেশ পুনর্গঠনের বিভিন্ন দায়িত্ব দেওয়া হবে। অলরেডি বিএনপির উদ্যোগে দেশ গড়ার পরিকল্পনা শীর্ষক কর্মসূচি চলছে।”

সেনাবাহিনীর সঙ্গে জিয়া পরিবারের সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, “জিয়া পরিবারের সাথে দূরত্ব তৈরি করতে স্বৈরাচার ডিফেন্স সদস্যদের মধ্যে জিয়া পরিবার সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা তৈরি করতে চেয়েছিল। অসুস্থ আম্মা সেনাকুঞ্জের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। ডাক্তাররা তাকে যেতে নিষেধ করেছিলেন। তবু তিনি গেছেন, কারণ, সেনাবাহিনীর সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটা আত্মিক।”

বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে তিনি ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) সাদিক হাসান রুমির কাছে প্রকাশ্যে দুঃখ প্রকাশ করেন। এ সময় তারেক রহমান বলেন, “স্ক্রিনে এখানে আমি একজনকে দেখতে চাচ্ছি। এটা একান্ত একটু পার্সোনাল ব্যাপার, তারপরেও আমি, সবাই আছেন, একান্ত পার্সোনাল ব্যাপার, তারপরে আমি একটু এখানে উল্লেখ করতে চাচ্ছি। আমাদের সামনে এখানে আম্মার (খালেদা জিয়া) সময় উনি ডিজিএফআইয়ে ছিলেন রুমি সাহেব ছিলেন। রুমি সাহেব উপস্থিত আছেন।”

এ সময় উপস্থিত সাদিক হাসান রুমি জবাব দেন, “জি আছি”।

এরপর তারেক রহমান বলেন, “রুমি সাহেব আপনার নিশ্চয়ই মনে আছে যে, একটা মিছিল হয়েছিল একবার, সেই পুরান ঢাকা থেকে আমিন বাজারে এবং পুরা মিছিলটা আমি হেঁটে এসেছিলাম, আম্মাও (খালেদা জিয়া) ছিলেন সেই মিছিলে। সেই মিছিলে অনেক ভিড় হট্টগোল। আপনি আমাকে একটা কোনো কিছু বলেছিলেন। আই অ্যাম ভেরি সরি, আমি সেদিন আপনার সাথে একটু রূঢ় ব্যবহার করেছিলাম। সবকিছু মিলে আই অ্যাম ভেরি সরি ফর দ্যাট। আমি অনেক দিন চেষ্টা করেছি আপনাকে রিচ করার জন্য। আই রিকোয়েস্ট মাই অ্যাপোলজি। আমি সুযোগ পাইনি। আজকে সুযোগ পেয়েছি। আই অ্যাম রিয়েলি সরি ফর দ্যাট।”

এর জবাবে মেজর জেনারেল (অব.) সাদিক হাসান রুমি বলেন, “আমি আপনার কাছে কৃতজ্ঞ থাকব। যেটা বলেছেন থ্যাংক ইউ ভেরি মাচ, আই উইল রিমেম্বার ইট।”

বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, পূর্বনির্ধারিত এই বৈঠকে ১০১ জন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক বাহিনীর সদস্য উপস্থিত ছিলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং সভা পরিচালনা করেন মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহী আকবর। সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমদ, ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরীসহ অন্য নেতারা বক্তব্য দেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া দেশ পুনর্গঠন সম্ভব নয়, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তারেক রহমান

প্রকাশকাল ০২:১৭:৩৬ এএম, বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
যেকোনো মূল্যে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অবসরপ্রাপ্ত সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।

সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, “যেকোনো মূল্যে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। কারণ দেশ পুনর্গঠনের পূর্ব শর্ত হলো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। গণতন্ত্র ফিরিয়ে না আনলে মানুষের ইচ্ছের প্রতিফলন ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনর্গঠন সম্ভব হবে না।”

দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তারেক রহমান অভিযোগ করেন যে, ডিফেন্সসহ বিভিন্ন খাতকে রাজনীতিকরণ করা হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “পতিত ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার দেশের প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে গেছে। সুতরাং আমাদের দায়িত্ব এই ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় গড়ে তোলা।”

অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “জনগণের ভোটে বিএনপি আগামীতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় গেলে আপনাদের মধ্যে যোগ্যদের খুঁজে বের করে দেশ পুনর্গঠনের বিভিন্ন দায়িত্ব দেওয়া হবে। অলরেডি বিএনপির উদ্যোগে দেশ গড়ার পরিকল্পনা শীর্ষক কর্মসূচি চলছে।”

সেনাবাহিনীর সঙ্গে জিয়া পরিবারের সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, “জিয়া পরিবারের সাথে দূরত্ব তৈরি করতে স্বৈরাচার ডিফেন্স সদস্যদের মধ্যে জিয়া পরিবার সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা তৈরি করতে চেয়েছিল। অসুস্থ আম্মা সেনাকুঞ্জের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। ডাক্তাররা তাকে যেতে নিষেধ করেছিলেন। তবু তিনি গেছেন, কারণ, সেনাবাহিনীর সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটা আত্মিক।”

বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে তিনি ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) সাদিক হাসান রুমির কাছে প্রকাশ্যে দুঃখ প্রকাশ করেন। এ সময় তারেক রহমান বলেন, “স্ক্রিনে এখানে আমি একজনকে দেখতে চাচ্ছি। এটা একান্ত একটু পার্সোনাল ব্যাপার, তারপরেও আমি, সবাই আছেন, একান্ত পার্সোনাল ব্যাপার, তারপরে আমি একটু এখানে উল্লেখ করতে চাচ্ছি। আমাদের সামনে এখানে আম্মার (খালেদা জিয়া) সময় উনি ডিজিএফআইয়ে ছিলেন রুমি সাহেব ছিলেন। রুমি সাহেব উপস্থিত আছেন।”

এ সময় উপস্থিত সাদিক হাসান রুমি জবাব দেন, “জি আছি”।

এরপর তারেক রহমান বলেন, “রুমি সাহেব আপনার নিশ্চয়ই মনে আছে যে, একটা মিছিল হয়েছিল একবার, সেই পুরান ঢাকা থেকে আমিন বাজারে এবং পুরা মিছিলটা আমি হেঁটে এসেছিলাম, আম্মাও (খালেদা জিয়া) ছিলেন সেই মিছিলে। সেই মিছিলে অনেক ভিড় হট্টগোল। আপনি আমাকে একটা কোনো কিছু বলেছিলেন। আই অ্যাম ভেরি সরি, আমি সেদিন আপনার সাথে একটু রূঢ় ব্যবহার করেছিলাম। সবকিছু মিলে আই অ্যাম ভেরি সরি ফর দ্যাট। আমি অনেক দিন চেষ্টা করেছি আপনাকে রিচ করার জন্য। আই রিকোয়েস্ট মাই অ্যাপোলজি। আমি সুযোগ পাইনি। আজকে সুযোগ পেয়েছি। আই অ্যাম রিয়েলি সরি ফর দ্যাট।”

এর জবাবে মেজর জেনারেল (অব.) সাদিক হাসান রুমি বলেন, “আমি আপনার কাছে কৃতজ্ঞ থাকব। যেটা বলেছেন থ্যাংক ইউ ভেরি মাচ, আই উইল রিমেম্বার ইট।”

বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, পূর্বনির্ধারিত এই বৈঠকে ১০১ জন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক বাহিনীর সদস্য উপস্থিত ছিলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং সভা পরিচালনা করেন মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহী আকবর। সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমদ, ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরীসহ অন্য নেতারা বক্তব্য দেন।