দেশে অবৈধ মোবাইল ফোনের ব্যবহার ঠেকাতে আগামী ১৬ ডিসেম্বর ন্যাশনাল ইক্যুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) ব্যবস্থা চালু করা হবে। তবে ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সব অনিবন্ধিত মোবাইল ফোন ১৬ ডিসেম্বরের পরিবর্তে আগামী বছরের ১৫ মার্চের মধ্যে নিবন্ধন করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, মোবাইল ফোন চোরাচালান, ক্লোন ফোন, রিফার্বিশড ফোন ও বিদেশের পুরানো ফোনের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ, মোবাইল ফোন ছিনতাই, অনলাইন জুয়া, মোবাইল ব্যাংকিং, এমএফএস ইত্যাদি সংশ্লিষ্ট ডিজিটাল অপরাধ থেকে জনসাধারণের সুরক্ষা এবং একইসাথে নিয়ম বহির্ভূতভাবে দেশের বাজারে অনুপ্রবেশকৃত মোবাইল ফোনের শুল্ক ফাঁকি প্রতিরোধকল্পে আগামী ১৬ ডিসেম্বর এনইআইআর (ন্যাশনাল ইক্যুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার) ব্যবস্থা চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে সব অনিবন্ধিত মোবাইল ফোন নিবন্ধন করার জন্য প্রাথমিকভাবে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছিল।
তবে মোবাইল বিজনেস কমিউনিটির সঙ্গে এ বিষয়ে গত তিনদিন ধারাবাহিক আলোচনা শেষে ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে দেশে থাকা সব অনিবন্ধিত মোবাইল ফোন ১৬ ডিসেম্বরের পরিবর্তে আগামী বছরের ১৫ মার্চের মধ্যে নিবন্ধন করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, মোবাইল ফোন আমদানিতে কোনও বাঁধা নেই। কত পুরানো ফোন আমদানি করা যাবে, কোন কোন মডেল ডাক টেলিযোগাযোগ বিভাগ তা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ উপযুক্ত কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন। তবে সরকারের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষকে আমদানির বিষয়ে অবহিত করতে হবে। সব পক্ষকে বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে লিখিতভাবে এ বিষয়ে জানাতে বলা হয়েছে।
এছাড়া মোবাইল ফোন আমদানিতে শুল্ক পুনঃনির্ধারণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা চলমান রয়েছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এ বিষয়ে মধ্যস্থতা করবে। আমদানিকারক ও উৎপাদনকারীরা একসাথে বসে সরকারকে লিখিতভাবে জানাবে বলে জানিয়েছে।
টেলিযোগাযোগ বিভাগের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই সিদ্ধান্তের পর দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নষ্ট করার অপচেষ্টা থেকে বিরত থাকার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে।
আগামী ১৬ ডিসেম্বর এনইআইআর উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এবং মোবাইল বিজনেস কমিউনিটির নেতারা দৃঢ় সমর্থন জানিয়েছেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এনইআইআর চালুর উদ্যোগে দেশের মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছিলেন, এই ব্যবস্থা ব্যবসায়ীদের বিশাল ক্ষতির মুখে ঠেলে দেবে। এ নিয়ে ৭ ডিসেম্বর বিটিআরসি ভবনের সামনে দিনভর অবস্থান করে রাখেন তারা। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কারওয়ানবাজার এবং যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে অবরোধ করেন তারা।
অপর দিকে, মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এমআইওবি) গত ৮ ডিসেম্বর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে, বর্তমানে ১৮টি কোম্পানি উৎপাদন লাইসেন্সধারী, যারা মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বাজারে কাজ করছে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এনইআইআর নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। এনইআইআর বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন।