হয়রানি ও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সারাদেশে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষ থেকে চারটি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুদকের এনফোর্সমেন্ট ইউনিট এ অভিযান পরিচালনা করে।
জানা গেছে, নরসিংদী জেলার পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে হয়রানি ও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুদক, সমন্বিত জেলা কার্যালয় গাজীপুর থেকে মঙ্গলবার একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানের শুরুতে টিম ছদ্মবেশে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে। এ সময় হাসপাতালের ডিজিটাল হাজিরা যাচাই করে কয়েকজন চিকিৎসকের নির্ধারিত সময়ের পর বিলম্বে উপস্থিত হওয়ার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া যায়। পাশাপাশি রোগীদের ওষুধ সরবরাহ-সংক্রান্ত রেজিস্টারসহ বিভিন্ন নথিপত্র পর্যালোচনা ও সংগ্রহ করা হয়। অবশিষ্ট রেকর্ডপত্র সংগ্রহ ও যাচাই শেষে টিম কর্তৃক কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
এদিকে ডিজিকন টেলিকমিউনিকেশন লিমিটেড, ডিজিকন গ্লোবাল সার্ভিসেস লিমিটেড এবং ডিজিকন টেকনোলজিস পিএলসি—এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এনআইডির তথ্য জালিয়াতি ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে দুদক, প্রধান কার্যালয় ঢাকা থেকে আরেকটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে দেখা যায়, তিনটির মধ্যে দুটি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের বাস্তব অস্তিত্ব নেই। তবে একটি প্রতিষ্ঠানে কল সেন্টার কার্যক্রম এবং ডিজিকন টেকনোলজিস পিএলসির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। অভিযানের সময় উক্ত প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট নথিপত্র সংগ্রহ করা হয়। নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
অন্যদিকে, শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট উপজেলার সরকারি শামসুর রহমান কলেজের ফান্ডের অর্থ আত্মসাতসহ নানা অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক, সমন্বিত জেলা কার্যালয় মাদারীপুর থেকে আরেকটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে দেখা যায়, মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও কলেজের ২ দশমিক ৪৭ একর জমি এওয়াজ বদল করা হয়েছে। এছাড়া সাবেক অধ্যক্ষ কর্তৃক অতিরিক্ত উত্তোলিত ৫ লাখ ৮৪ হাজার টাকা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও এখনও কলেজ ফান্ডে জমা হয়নি। সার্বিক বিবেচনায় অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা রয়েছে বলে টিমের কাছে প্রতীয়মান হয়। অভিযানকালে সংগৃহীত তথ্য ও নথিপত্র যাচাই করে টিম কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে।
এছাড়া লালমনিরহাট জেলায় সার ডিলারদের বিরুদ্ধে সরকার নির্ধারিত দামের অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগে দুদক, সমন্বিত জেলা কার্যালয় কুড়িগ্রাম থেকে দুই দিনব্যাপী এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় লালমনিরহাট জেলার বিভিন্ন উপজেলার বিএডিসি ও বিসিআইসি কার্যালয় থেকে রেকর্ড সংগ্রহ ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলা হয়। পাশাপাশি আদিতমারী উপজেলার কয়েকটি সার ডিলারের দোকান ও গুদাম পরিদর্শন করে দুদক টিম। কৃষকরা দুদক টিমের কাছে নির্ধারিত মূল্যের অতিরিক্ত মূল্য আদায়, সার সংকট এবং ক্রয়ে হয়রানির অভিযোগ করেন। অভিযানকালে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন গুদামে সার না রেখে অন্যত্র মজুদের তথ্য পাওয়া যায়। টিম সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন নথিপত্র সংগ্রহ করেছে। সব তথ্যাদি পর্যালোচনার পর টিম কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে।