ঢাকা ০২:২৮ এএম, রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিপিং ব্যয় বাড়ার প্রভাব পড়বে ভোক্তাদের ওপর

সবুজবাংলা টিভি ডটকম-
  • প্রকাশকাল ০৭:৩৬:১৫ এএম, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫ ৩ পাঠক
সবুজবাংলা টিভি এর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (সিপিএ) বর্ধিত ট্যারিফ কার্যকর হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের একমাত্র সমুদ্রগামী কনটেইনার জাহাজ মালিক ও অপারেটর প্রতিষ্ঠান এইচআর লাইনস লিমিটেড ফ্রেট রেট সমন্বয়ের ঘোষণা দিয়েছে। একই পথে হেঁটেছে আন্তর্জাতিক শিপিং কম্পানি ডেনমার্কভিত্তিক মায়েরস্ক লাইনও।

এতে দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে খরচ আরো বাড়বে, যার বোঝা শেষ পর্যন্ত ভোক্তাদের ওপর চাপবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

 

প্রাপ্ত তথ্যানুসারে, এইচআর লাইনস লিমিটেড জানিয়েছে, সিপিএ এরই মধ্যে পোর্ট ডিউস, পাইলটেজ, বার্থ দখল ফি, স্টিভিডোরিং, টার্মিনাল হ্যান্ডলিংসহ সংশ্লিষ্ট ভেসেল ও কনটেইনার হ্যান্ডলিং চার্জ বৃদ্ধি করেছে, যা ১৫ অক্টোবর থেকে কার্যকর হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে টেকসই অপারেশন, নিরবচ্ছিন্ন সেবা ও ব্যয় ভারসাম্য রাখতে ফ্রেট রেট সমন্বয় অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।

এইচআর লাইনসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দরে সব ধরনের লোড ও আনলোড কার্যক্রমে নতুন হার প্রযোজ্য হবে। বিদ্যমান এইচকেভিত্তিক চুক্তির জন্য প্রতিটি পণ্য বোঝাই কনটেইনারের জন্য অতিরিক্ত ৩০ ডলার এবং খালি কনটেইনারের জন্য অতিরিক্ত ২০ ডলার চার্জ আদায় করা হবে। এফআইওভিত্তিক চুক্তির ক্ষেত্রে প্রতি টিইইউস (২০ ফুট দৈর্ঘ্যের একক কনটেইনার) পণ্য বোঝাই কনটেইনারের জন্য অতিরিক্ত ২৫ ডলার এবং খালি কনটেইনারের জন্য অতিরিক্ত ১৫ ডলার আদায় করা হবে।

১৫ অক্টোবরের পর যেসব পণ্য চালান চট্টগ্রাম বন্দরে জেটিতে বার্থিং বা আনবার্থিং করবে, সেগুলোর ক্ষেত্রে এই সমন্বিত ফ্রেট রেট কার্যকর হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

এর আগে, বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শিপিং কম্পানি মায়েরস্ক লাইনও তাদের চার্জ সমন্বয়ের ঘোষণা দিয়েছে। তারা ২০ ফুট কনটেইনারে টার্মিনাল হ্যান্ডলিং চার্জ ১২০ ডলার থেকে বাড়িয়ে ১৬৫ ডলার করছে বলে জানা গেছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের এই ট্যারিফ বৃদ্ধি ও এর পরিপ্রেক্ষিতে শিপিং কম্পানিগুলোর ফ্রেট রেট বাড়ানোয় প্রতি ২০ ফুট কনটেইনারে আমদানি-রপ্তানি খরচ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যাবে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নতুন ট্যারিফে জাহাজ ও লজিস্টিকস সেবার ওপর গড় বৃদ্ধির হার ৪১ শতাংশ। এই অস্বাভাবিক মাশুল বৃদ্ধি দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে দেশের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা কমাবে।

ব্যাবসায়িক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে এরই মধ্যেই এই বর্ধিত ট্যারিফ স্থগিত করে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে যৌক্তিক হার নির্ধারণের দাবি জানানো হয়েছে। তাঁরা সতর্ক করেছেন, এই অতিরিক্ত ব্যয় শেষ পর্যন্ত পণ্যমূল্যের মাধ্যমে সাধারণ জনগণের ওপরই বর্তাবে। পোর্ট ইউজার্স ফোরামের আহ্বায়ক আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বরাবর জরুরি এক পত্রে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ২০২৫ সালের প্রস্তাবিত ট্যারিফ পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছি।

গড়ে প্রায় ৪১ শতাংশ পর্যন্ত নতুন মাশুলের কারণে শিপিং লাইনসগুলো ট্যারিফ বাড়াচ্ছে, যা ব্যবসার জন্য অশনিসংকেত। ’

সূত্র: কালের কণ্ঠ

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

শিপিং ব্যয় বাড়ার প্রভাব পড়বে ভোক্তাদের ওপর

প্রকাশকাল ০৭:৩৬:১৫ এএম, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (সিপিএ) বর্ধিত ট্যারিফ কার্যকর হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের একমাত্র সমুদ্রগামী কনটেইনার জাহাজ মালিক ও অপারেটর প্রতিষ্ঠান এইচআর লাইনস লিমিটেড ফ্রেট রেট সমন্বয়ের ঘোষণা দিয়েছে। একই পথে হেঁটেছে আন্তর্জাতিক শিপিং কম্পানি ডেনমার্কভিত্তিক মায়েরস্ক লাইনও।

এতে দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে খরচ আরো বাড়বে, যার বোঝা শেষ পর্যন্ত ভোক্তাদের ওপর চাপবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

 

প্রাপ্ত তথ্যানুসারে, এইচআর লাইনস লিমিটেড জানিয়েছে, সিপিএ এরই মধ্যে পোর্ট ডিউস, পাইলটেজ, বার্থ দখল ফি, স্টিভিডোরিং, টার্মিনাল হ্যান্ডলিংসহ সংশ্লিষ্ট ভেসেল ও কনটেইনার হ্যান্ডলিং চার্জ বৃদ্ধি করেছে, যা ১৫ অক্টোবর থেকে কার্যকর হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে টেকসই অপারেশন, নিরবচ্ছিন্ন সেবা ও ব্যয় ভারসাম্য রাখতে ফ্রেট রেট সমন্বয় অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।

এইচআর লাইনসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দরে সব ধরনের লোড ও আনলোড কার্যক্রমে নতুন হার প্রযোজ্য হবে। বিদ্যমান এইচকেভিত্তিক চুক্তির জন্য প্রতিটি পণ্য বোঝাই কনটেইনারের জন্য অতিরিক্ত ৩০ ডলার এবং খালি কনটেইনারের জন্য অতিরিক্ত ২০ ডলার চার্জ আদায় করা হবে। এফআইওভিত্তিক চুক্তির ক্ষেত্রে প্রতি টিইইউস (২০ ফুট দৈর্ঘ্যের একক কনটেইনার) পণ্য বোঝাই কনটেইনারের জন্য অতিরিক্ত ২৫ ডলার এবং খালি কনটেইনারের জন্য অতিরিক্ত ১৫ ডলার আদায় করা হবে।

১৫ অক্টোবরের পর যেসব পণ্য চালান চট্টগ্রাম বন্দরে জেটিতে বার্থিং বা আনবার্থিং করবে, সেগুলোর ক্ষেত্রে এই সমন্বিত ফ্রেট রেট কার্যকর হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

এর আগে, বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শিপিং কম্পানি মায়েরস্ক লাইনও তাদের চার্জ সমন্বয়ের ঘোষণা দিয়েছে। তারা ২০ ফুট কনটেইনারে টার্মিনাল হ্যান্ডলিং চার্জ ১২০ ডলার থেকে বাড়িয়ে ১৬৫ ডলার করছে বলে জানা গেছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের এই ট্যারিফ বৃদ্ধি ও এর পরিপ্রেক্ষিতে শিপিং কম্পানিগুলোর ফ্রেট রেট বাড়ানোয় প্রতি ২০ ফুট কনটেইনারে আমদানি-রপ্তানি খরচ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যাবে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নতুন ট্যারিফে জাহাজ ও লজিস্টিকস সেবার ওপর গড় বৃদ্ধির হার ৪১ শতাংশ। এই অস্বাভাবিক মাশুল বৃদ্ধি দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে দেশের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা কমাবে।

ব্যাবসায়িক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে এরই মধ্যেই এই বর্ধিত ট্যারিফ স্থগিত করে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে যৌক্তিক হার নির্ধারণের দাবি জানানো হয়েছে। তাঁরা সতর্ক করেছেন, এই অতিরিক্ত ব্যয় শেষ পর্যন্ত পণ্যমূল্যের মাধ্যমে সাধারণ জনগণের ওপরই বর্তাবে। পোর্ট ইউজার্স ফোরামের আহ্বায়ক আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বরাবর জরুরি এক পত্রে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ২০২৫ সালের প্রস্তাবিত ট্যারিফ পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছি।

গড়ে প্রায় ৪১ শতাংশ পর্যন্ত নতুন মাশুলের কারণে শিপিং লাইনসগুলো ট্যারিফ বাড়াচ্ছে, যা ব্যবসার জন্য অশনিসংকেত। ’

সূত্র: কালের কণ্ঠ