‘এবার জেতাকে অভ্যাসে পরিণত করতে চাই’ -হারমনপ্রীত কৌর
‘বেড়াটা ভাঙতে চেয়েছিলাম। এই জয় দরকার ছিল। সবে শুরু। এবার জেতাকে অভ্যাসে পরিণত করতে চাই।’ চোখেমুখে তৃপ্তির ঝিলিক, কণ্ঠে আবেগ আর গর্ব। নারী ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতে ভারতের অধিনায়ক হারমনপ্রীত কৌর এভাবেই প্রকাশ করলেন নিজের অনুভূতি।
দীর্ঘদিন ধরেই বিশ্বকাপের ফাইনাল ভারতের নারীদের কাছে ছিল এক অধরা স্বপ্ন। দু’বার রানার্সআপ হয়েও ট্রফি ছোঁয়া হয়নি। এবার সেই দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটালেন হারমনপ্রীত। দলের প্রতিটি সদস্যের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা পরপর তিনটি ম্যাচে হেরেছিলাম। কিন্তু দলের কেউ বিশ্বাস হারায়নি। সবাই জানত, কিছু একটা ভালো ঘটবেই। আমরা দিন-রাত খেটেছি, একে অপরের ওপর আস্থা রেখেছি এটাই আমাদের শক্তি।’
ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে হারমনপ্রীতের সিদ্ধান্তই বদলে দেয় ম্যাচের গতি। তিনি বলেন, ‘লরা আর সুনে দারুণ খেলছিল। হঠাৎ শেফালির দিকে তাকিয়ে ভাবলাম, একটা ফাটকা খেলি। খালি এক ওভার দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু ও খেলাটাই বদলে দিল। এত ভালো বল করছিল যে পরে আরও ওভার দিয়েছি। পুরো কৃতিত্ব ওর।’
অধিনায়ক কৃতিত্ব দেন তার সতীর্থদের ও কোচ অমল মজুমদারকে, ‘গত দুই বছরে কোচ আমাদের মানসিকভাবে ভীষণভাবে প্রস্তুত করেছেন। বোর্ডও সব রকম সহায়তা দিয়েছে। এই ট্রফি পুরো দলের, পুরো ভারতের।’
ঘরের মাঠে নারী ক্রিকেটের এই সাফল্য ভারতের ক্রীড়া ইতিহাসে নতুন অধ্যায় যোগ করল। পুরুষ দলের ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের পর এবার নারীরাও বিশ্বকাপ জিতে প্রমাণ করল সময়টা এখন ভারতেরই।
এর আগে বৃষ্টির কারণে দেরিতে শুরু হওয়া মুম্বাইয়ের ফাইনালে আগে ব্যাট করে ভারত তোলে ৭ উইকেটে ২৯৮ রান, যা নারী বিশ্বকাপ ফাইনালের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। দলের পক্ষে শেফালি ভার্মা ৮৭, দীপ্তি শর্মা ৫৮, স্মৃতি মান্দানা ৪৫ ও রিচা ঘোষ ৩৪ রান করেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আয়াবোঙ্গা খাকা নেন ৩ উইকেট।
প্রোটিয়ারা জবাবে লরা উলভার্টের সেঞ্চুরিতেও (১০১) ২৪৬ রানে গুটিয়ে যায়। তিন ফাইনালে হার যেন আবারও ‘চোকার্স’ তকমা ফিরিয়ে দিলো দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে। ভারতের পক্ষে দীপ্তি শর্মা নেন ৫ উইকেট, আর বল হাতে চমক দেখান শেফালি ভার্মা, নেন ২ উইকেট। ব্যাট-বল দু’দিকেই জ্বলে ওঠা শেফালি যেন হয়ে উঠেছিলেন ভারতের ‘এক্স-ফ্যাক্টর’।