ঢাকা ০৬:১৩ পিএম, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রিয়ালের হোঁচট খাওয়ার রাতে বার্সেলোনার দারুণ জয়

সবুজবাংলা টিভি ডটকম-
  • প্রকাশকাল ০৬:৩৫:১৪ এএম, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫ ৫ পাঠক
সবুজবাংলা টিভি এর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
রায়ো ভাইয়েকানোর মাঠে গোল পায়নি রিয়াল মাদ্রিদ। আক্রমণ ছিল, শটও ছিল প্রচুর, কিন্তু গোলরক্ষক আউগুস্তো বাতাইয়ার সামনে সব ব্যর্থ হয়। অপরদিকে সেল্তা ভিগোর বিপক্ষে প্রথমার্ধে সমান তালে লড়াই করে বার্সেলোনা। কিন্তু রবের্ত লেভানদোভস্কির দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকে শেষ পর্যন্ত জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ল তারা। এতে রিয়ালের সঙ্গে ব্যবধানও কমাল হান্সি ফ্লিকের দল।

গতকাল রাতে লা লিগায় ভাইয়েকানোর সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে রিয়াল। ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত তারা। কিন্তু আর্দা গিলেরের দূরপাল্লার শটটা ঝাঁপিয়ে ঠেকান বাতাইয়া। এরপর ম্যাচের বেশির ভাগ সময়ই চলেছে রেয়ালের আক্রমণ বনাম ভাইয়েকানোর রক্ষণ। বল দখলে ছিল রেয়ালের ৫৪ শতাংশ, কিন্তু কার্যকর কোনো আক্রমণ তৈরি করতে পারেনি তারা। ২১ শটের মধ্যে মাত্র পাঁচটি ছিল লক্ষ্যে।

প্রথমার্ধে সবচেয়ে বড় সুযোগটা নষ্ট করেন রাউল আসেন্সিও। কাছ থেকে হেডে বল লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি। বিপরীতে ভাইয়েকানোও একবার গোলের সুযোগ পেয়েছিল, কিন্তু আন্দ্রেই রাতুইয়ের শট কোর্তোয়ার হাতে ধরা পড়ে। বিরতির আগে ভিনিসিউস জুনিয়রের শটটাও দুর্দান্ত সেভে ফিরিয়ে দেন বাতাইয়া।

দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের গতি বাড়ে। ৫০তম মিনিটে হোর্হে দে ফ্রুতোসের শট যায় বাইরে, তিন মিনিট পর গিলেরের বাঁকানো শট বেরিয়ে যায় পোস্ট ঘেঁষে। ৫৫তম মিনিটে জুড বেলিংহ‍্যামের শটও ঝাঁপিয়ে ঠেকান বাতাইয়া। এরপর ৬৯তম মিনিটে ভালভের্দে চেষ্টা করেন দূরপাল্লার শটে, সেবারও সেভ বাতাইয়ার। ম্যাচের শেষ দিকে মিলিতাওয়ের হেডটা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দিনটা নিজের করে নেন এই আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক।

যোগ করা সময়ে গিলেরের শটও এক ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে বাইরে চলে গেলে হতাশায় ডুবে রেয়াল। শেষ পর্যন্ত গোলশূন্য ড্রয়ে মাঠ ছাড়ে দুই দল। ১২ ম্যাচে ১০ জয় ও এক ড্রয়ে ৩১ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে রেয়াল মাদ্রিদ। সমান ম্যাচে ২৬ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে ভিয়ারেয়াল, ২৫ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আছে শিরোপাধারী বার্সেলোনা।

লিগের আরেক ম্যাচে প্রতিপক্ষের মাঠে ৪-২ ব্যবধানে জিতেছে বার্সেলোনা। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিল তারা। চতুর্থ মিনিটেই প্রথম সুযোগ পায় দলটি, লেভানদোভস্কির শট ঠেকান সেল্তার গোলরক্ষক। দশম মিনিটে সফল স্পট কিকে দলকে এগিয়ে নেন পোলিশ তারকা। গোলরক্ষক ছোঁয়া লাগলেও বল জালে ঢুকে যায়।

তবে লিড বেশিক্ষণ টিকেনি। পরের মিনিটেই অফসাইডের ফাঁদ এড়িয়ে থ্রু বল পেয়ে জোরাল শটে গোল করেন সেল্তার সের্হিও কারেইরা। ১-১ স্কোরলাইনে ম্যাচে ফেরে সমতা। কয়েক মিনিট পর র‍্যাশফোর্ডের শট লাগে পোস্টে, ফিরতি বলে ইয়ামালের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। ৩৭তম মিনিটে র‍্যাশফোর্ডের ক্রসে ছয় গজ বক্সে দারুণ ভলিতে বল জালে পাঠিয়ে আবারও লিড এনে দেন লেভানদোভস্কি।

কিন্তু আবারও গোল হজম করে বার্সেলোনা। ৪০তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে জোরাল শটে দর্শনীয় এক গোল করেন বোরহা ইগলেসিয়াস। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে ইয়ামালের নিচু শটে আবার এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। র‍্যাশফোর্ডের কাট-ব্যাক প্রতিপক্ষের পায়ে লেগে পেয়ে যান ইয়ামাল, ঠান্ডা মাথায় কাছের পোস্ট দিয়ে বল জালে জড়ান এই তরুণ ফরোয়ার্ড।

বিরতির পর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি নেয় ফ্লিকের দল। যদিও স্পষ্ট কোনো সুযোগ তারা পাচ্ছিল না, তবে ৭৩তম মিনিটে আবার গোলের দেখা পান লেভানদোভস্কি। র‍্যাশফোর্ডের কর্নারে হেড থেকে নিজের হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন তিনি। শেষ দিকে ইয়ামালের শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে, ফলে ব্যবধান বাড়েনি।

ম্যাচে তিনটি গোলে অবদান রাখেন র‍্যাশফোর্ড, যদিও নিজে কোনো গোল পাননি। শেষ দিকে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ফ্রেংকি ডি ইয়ং, যা বার্সেলোনার জন্য কিছুটা দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে থাকল। পরের ম্যাচে আথলেতিক বিলবাওয়ের বিপক্ষে খেলতে পারবেন না এই ডাচ মিডফিল্ডার।

১২ ম্যাচে ৯ জয় ও এক ড্রয়ে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে উঠে এসেছে বার্সেলোনা। ৩১ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রেয়াল মাদ্রিদ, যারা দিনের শুরুতে রায়ো ভাইয়েকানোর বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করেছিল। ম্যাচে প্রায় ৬২ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে ২১ শট নেয় বার্সেলোনা, যার ৯টি ছিল লক্ষ্যে। সেল্তার পাঁচ শটের তিনটি ছিল টার্গেটে।

আন্তর্জাতিক বিরতির পর আগামী ২২ নভেম্বর ঘরের মাঠে আথলেতিক বিলবাওয়ের মুখোমুখি হবে বার্সেলোনা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

রিয়ালের হোঁচট খাওয়ার রাতে বার্সেলোনার দারুণ জয়

প্রকাশকাল ০৬:৩৫:১৪ এএম, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫
রায়ো ভাইয়েকানোর মাঠে গোল পায়নি রিয়াল মাদ্রিদ। আক্রমণ ছিল, শটও ছিল প্রচুর, কিন্তু গোলরক্ষক আউগুস্তো বাতাইয়ার সামনে সব ব্যর্থ হয়। অপরদিকে সেল্তা ভিগোর বিপক্ষে প্রথমার্ধে সমান তালে লড়াই করে বার্সেলোনা। কিন্তু রবের্ত লেভানদোভস্কির দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকে শেষ পর্যন্ত জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ল তারা। এতে রিয়ালের সঙ্গে ব্যবধানও কমাল হান্সি ফ্লিকের দল।

গতকাল রাতে লা লিগায় ভাইয়েকানোর সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে রিয়াল। ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত তারা। কিন্তু আর্দা গিলেরের দূরপাল্লার শটটা ঝাঁপিয়ে ঠেকান বাতাইয়া। এরপর ম্যাচের বেশির ভাগ সময়ই চলেছে রেয়ালের আক্রমণ বনাম ভাইয়েকানোর রক্ষণ। বল দখলে ছিল রেয়ালের ৫৪ শতাংশ, কিন্তু কার্যকর কোনো আক্রমণ তৈরি করতে পারেনি তারা। ২১ শটের মধ্যে মাত্র পাঁচটি ছিল লক্ষ্যে।

প্রথমার্ধে সবচেয়ে বড় সুযোগটা নষ্ট করেন রাউল আসেন্সিও। কাছ থেকে হেডে বল লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি। বিপরীতে ভাইয়েকানোও একবার গোলের সুযোগ পেয়েছিল, কিন্তু আন্দ্রেই রাতুইয়ের শট কোর্তোয়ার হাতে ধরা পড়ে। বিরতির আগে ভিনিসিউস জুনিয়রের শটটাও দুর্দান্ত সেভে ফিরিয়ে দেন বাতাইয়া।

দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের গতি বাড়ে। ৫০তম মিনিটে হোর্হে দে ফ্রুতোসের শট যায় বাইরে, তিন মিনিট পর গিলেরের বাঁকানো শট বেরিয়ে যায় পোস্ট ঘেঁষে। ৫৫তম মিনিটে জুড বেলিংহ‍্যামের শটও ঝাঁপিয়ে ঠেকান বাতাইয়া। এরপর ৬৯তম মিনিটে ভালভের্দে চেষ্টা করেন দূরপাল্লার শটে, সেবারও সেভ বাতাইয়ার। ম্যাচের শেষ দিকে মিলিতাওয়ের হেডটা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দিনটা নিজের করে নেন এই আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক।

যোগ করা সময়ে গিলেরের শটও এক ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে বাইরে চলে গেলে হতাশায় ডুবে রেয়াল। শেষ পর্যন্ত গোলশূন্য ড্রয়ে মাঠ ছাড়ে দুই দল। ১২ ম্যাচে ১০ জয় ও এক ড্রয়ে ৩১ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে রেয়াল মাদ্রিদ। সমান ম্যাচে ২৬ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে ভিয়ারেয়াল, ২৫ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আছে শিরোপাধারী বার্সেলোনা।

লিগের আরেক ম্যাচে প্রতিপক্ষের মাঠে ৪-২ ব্যবধানে জিতেছে বার্সেলোনা। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিল তারা। চতুর্থ মিনিটেই প্রথম সুযোগ পায় দলটি, লেভানদোভস্কির শট ঠেকান সেল্তার গোলরক্ষক। দশম মিনিটে সফল স্পট কিকে দলকে এগিয়ে নেন পোলিশ তারকা। গোলরক্ষক ছোঁয়া লাগলেও বল জালে ঢুকে যায়।

তবে লিড বেশিক্ষণ টিকেনি। পরের মিনিটেই অফসাইডের ফাঁদ এড়িয়ে থ্রু বল পেয়ে জোরাল শটে গোল করেন সেল্তার সের্হিও কারেইরা। ১-১ স্কোরলাইনে ম্যাচে ফেরে সমতা। কয়েক মিনিট পর র‍্যাশফোর্ডের শট লাগে পোস্টে, ফিরতি বলে ইয়ামালের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। ৩৭তম মিনিটে র‍্যাশফোর্ডের ক্রসে ছয় গজ বক্সে দারুণ ভলিতে বল জালে পাঠিয়ে আবারও লিড এনে দেন লেভানদোভস্কি।

কিন্তু আবারও গোল হজম করে বার্সেলোনা। ৪০তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে জোরাল শটে দর্শনীয় এক গোল করেন বোরহা ইগলেসিয়াস। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে ইয়ামালের নিচু শটে আবার এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। র‍্যাশফোর্ডের কাট-ব্যাক প্রতিপক্ষের পায়ে লেগে পেয়ে যান ইয়ামাল, ঠান্ডা মাথায় কাছের পোস্ট দিয়ে বল জালে জড়ান এই তরুণ ফরোয়ার্ড।

বিরতির পর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি নেয় ফ্লিকের দল। যদিও স্পষ্ট কোনো সুযোগ তারা পাচ্ছিল না, তবে ৭৩তম মিনিটে আবার গোলের দেখা পান লেভানদোভস্কি। র‍্যাশফোর্ডের কর্নারে হেড থেকে নিজের হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন তিনি। শেষ দিকে ইয়ামালের শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে, ফলে ব্যবধান বাড়েনি।

ম্যাচে তিনটি গোলে অবদান রাখেন র‍্যাশফোর্ড, যদিও নিজে কোনো গোল পাননি। শেষ দিকে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ফ্রেংকি ডি ইয়ং, যা বার্সেলোনার জন্য কিছুটা দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে থাকল। পরের ম্যাচে আথলেতিক বিলবাওয়ের বিপক্ষে খেলতে পারবেন না এই ডাচ মিডফিল্ডার।

১২ ম্যাচে ৯ জয় ও এক ড্রয়ে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে উঠে এসেছে বার্সেলোনা। ৩১ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রেয়াল মাদ্রিদ, যারা দিনের শুরুতে রায়ো ভাইয়েকানোর বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করেছিল। ম্যাচে প্রায় ৬২ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে ২১ শট নেয় বার্সেলোনা, যার ৯টি ছিল লক্ষ্যে। সেল্তার পাঁচ শটের তিনটি ছিল টার্গেটে।

আন্তর্জাতিক বিরতির পর আগামী ২২ নভেম্বর ঘরের মাঠে আথলেতিক বিলবাওয়ের মুখোমুখি হবে বার্সেলোনা।