ঢাকা ০৩:৫২ এএম, বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পুরুষ ডাক্তারের নারী রোগী

সবুজবাংলা টিভি ডটকম-
  • প্রকাশকাল ০৫:২৪:৩২ এএম, রবিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৫ ২১ পাঠক
সবুজবাংলা টিভি এর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
চেম্বারের সামনে অপেক্ষমাণ দুই ব্যক্তির আলাপ কানে এলো। তারা বলছিলেন- এই পুরুষ ডাক্তারের কাছে সব নারী রোগী। মুখের কথা কেড়ে নিয়ে আরেকজন বললেন, জামাইয়ের চিকিৎসাও করেন আমাদের ডাক্তার।

তাঁর নাম অধ্যাপক ডা. রজত কুমার বিশ্বাস, প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা ও অধ্যাপনা শেষে অবসর নিলেও রোগীরা দেননি ছুটি। প্রতিদিন তাই চেম্বারের সামনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় থাকেন তারা। এই চিকিৎসকের কাছে হাতে-কলমে শিখে দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে আছেন অনেক গাইনোকোলজিস্ট। তাঁরা যখন ডা. রজত কুমার বিশ্বাসের প্রেসক্রিপশন দেখেন, তখন দ্রুত রোগ নির্ণয় কিংবা ওষুধ নির্বাচনের বিষয় দেখে নতুন কোনও পরামর্শ দেওয়ার সাহস পান না।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেবা প্রত্যাশীদের প্রশ্ন-কিভাবে তাঁকে রোগী দেখানোর সিরিয়াল মিলবে? যে ৪টি প্রতিষ্ঠানে রোগী দেখেন, অপারেশন করেন-সেখানকার নির্দিষ্ট নাম্বারে নির্ধারিত সময়ে ফোন করেও যে নাম ওঠানো যায় না। এ প্রশ্নের উত্তর জানার পর পাল্টা প্রশ্ন করার সুযোগ নেই। ডা. রজত কুমার বিশ্বাস বললেন-‘পেশাটাই এমন। ওটিতে রোগীর জীবন বাঁচাতে কেটে যায় বেলা। নড়বড় হয়ে যায় অপেক্ষমাণ রোগী দেখার সময়। নিজের সময়মতো ঘুম-খাওয়া দাওয়ার সুযোগও মিলে না’।

চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার পূর্ব গোমদন্ডী ৪ নম্বর ওয়ার্ড দত্ত পাড়ার শিক্ষানুরাগী প্রয়াত মনোরঞ্জন বিশ্বাসের পাঁচ পুত্র, চার কন্যার মধ্যে ডা. রজত প্রথম সন্তান। শৈশব থেকেই ছিলেন মেধাবী। প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বরাবরই ছিলেন প্রথম। উচ্চ মাধ্যমিকেও ছিল মেধার স্বাক্ষর। কধুরখীল উচ্চ বিদ্যালয়ের সেই কৃতি ছাত্রের কথা এখনও উঠে আসে ক্লাসরুমে, সামাজিক অনুষ্ঠানে, পাড়ার আড্ডায়।

সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস এর পাঠ চুকিয়ে বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস (বিসিপিএস) থেকে নিয়েছেন এফসিপিএস ডিগ্রি। হয়েছেন ইনফার্টিলিটি বিশেষজ্ঞ। ২০২১ সালে তিনি অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান। দক্ষতা আছে ল্যাপারোস্কোপি, টিভিএস সহ গাইনোকোলজির জটিল পরীক্ষা-নিরীক্ষায়। এখন নিয়মিত চেম্বার করেন পাঁচলাইশ শিশু ও জেনারেল হাসপাতাল, বেলভিউ হাসপাতাল, ইনোভা হাসপাতাল ও মেট্রো ডায়াগনস্টিক সেন্টারে।

মা ও শিশুস্বাস্থ্য, প্রজনন স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা সেবা, গবেষণা ও চিকিৎসকদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা পালনকারী প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের সংগঠন অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ (ওজিএসবি) চট্টগ্রাম শাখার সঙ্গে যুক্ত থেকে তিনি দিয়ে যাচ্ছেন পরামর্শ।

এলাকার সন্তান সুব্রত দত্ত রাজু জানালেন, জন্মস্থান পূর্ব গোমদন্ডী হেমপংকজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভূমিদাতা ডা. রজত কুমার বিশ্বাস। দত্তপাড়ায় একটি সড়ক তাঁর নামে নামকরণ করা হয়েছে। সড়কের প্রবেশমুখে বসবে এই গুণীজনের প্রতিকৃতি।

দত্তপাড়া সুহৃদ ক্লাবের সভাপতি প্রভাস চক্রবর্ত্তী বলেন, তাঁর অন্যান্য গুণের মধ্যে আছে ধৈর্য্য এবং পরিশ্রম। বিপদে-আপদে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন সাধারণ মানুষের কাছে।

‘হাসপাতাল-চেম্বার-ওটি’ তিনের বৃত্তে থেকে একঘেয়েমি দূর হয় কি করে? এ প্রশ্নে ডা. রজত কুমার বিশ্বাস গাইলেন দুটো লাইন-‘ক্লান্তি আমার ক্ষমা করো প্রভু…’। রবীন্দ্র সঙ্গীত ভালোবাসেন, তাই সুযোগ পেলেই হাতে তুলে নেন হারমোনিয়াম। জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ্, চট্টগ্রাম শাখার সহ-সভাপতি তিনি। ২০১৮ সালের ১১ জুন মা মিনতি প্রভা বিশ্বাসকে হারানোর পর শোকব্যথা ভুলতে এই গানেই তিনি খুঁজে নেন সান্ত্বনা।

শুধু স্বামী নন, স্ত্রী নিউরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. শিউলী মজুমদারও দারুণ ব্যস্ত তাঁর পেশায়। ছেলে শাশ্বত বিশ্বাস চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট ইংলিশ স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী এবং উচ্চাঙ্গ সংগীতে অনুরক্ত। বোন জামাই অধ্যাপক ডা. পঞ্চানন দাশ, ডা. প্রতীক সেন, ভাগনি ডা. একা সরকার, ডা. প্রান্ত সরকারও হেঁটেছেন তাঁর দেখানো পথে।

ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথ ও আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবির) গবেষণা বলছে, এমবিবিএস পাস করা ৯১ শতাংশ নারী চিকিৎসক স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যায় উচ্চতর ডিগ্রি নিতে আগ্রহী। বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলে (বিএমডিসি) নিবন্ধিত চিকিৎসকদের মধ্যে ৩৪ হাজার ৬৯৭ জনের তথ্য বিশ্লেষণ করে গবেষকেরা দেখেছেন, নারী চিকিৎসকদের ৯৬ শতাংশের বিশেষ দক্ষতা স্ত্রী ও প্রসূতি রোগ বিষয়ে। সেক্ষেত্রে পুরুষের সংখ্যা কম।

এমন প্রেক্ষাপটে পুরুষ চিকিৎসক হিসেবে স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যায় ক্যারিয়ার গড়ার ভাবনা কিভাবে এলো-এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. রজত কুমার বিশ্বাস স্মরণ করেন দেশে স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যার কিংবদন্তিতুল্য চিকিৎসক প্রয়াত অধ্যাপক এ এইচ এম তৌহিদুল আনোয়ার চৌধুরী (টি এ চৌধুরী), প্রফেসর ডা. এম এ তাহের খান, ডা. জোহরা বেগম কাজী, জাতীয় অধ্যাপক ডা. শায়লা খাতুন, অধ্যাপিকা ডা. সৈয়দা নুরজাহান ভূঁইয়ার মতো গুণী চিকিৎসকদের।

তিনি বলেন, একলাম্পশিয়া ও প্রসব পরবর্তী রক্তক্ষরণ মাতৃমৃত্যুর বড় কারণ। পাশাপাশি বন্ধ্যাত্ব নিয়ে একতরফা নারীদেরই নিগ্রহের শিকার হতে হয় বেশি। বিষয়টা চ্যালেঞ্জিং হলেও এটাকে গবেষণার বিষয় হিসেবে বেছে নিয়ে কাজ শুরু করি। একজন চিকিৎসকের কাছে রোগীকে সঠিক চিকিৎসা দেওয়াই প্রধান কাজ। এখানে রোগী পুরুষ নাকি নারী-সেটা বিবেচ্য নয়। এখন নারীরা প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে অনেক সচেতন।

অধ্যাপক ডা. রজত কুমার বিশ্বাসের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা, পেশাদারিত্ব এবং মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি তাঁকে চট্টগ্রামের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে-এ কথা জানালেন গাইনি চিকিৎসকরাই।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

পুরুষ ডাক্তারের নারী রোগী

প্রকাশকাল ০৫:২৪:৩২ এএম, রবিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৫
চেম্বারের সামনে অপেক্ষমাণ দুই ব্যক্তির আলাপ কানে এলো। তারা বলছিলেন- এই পুরুষ ডাক্তারের কাছে সব নারী রোগী। মুখের কথা কেড়ে নিয়ে আরেকজন বললেন, জামাইয়ের চিকিৎসাও করেন আমাদের ডাক্তার।

তাঁর নাম অধ্যাপক ডা. রজত কুমার বিশ্বাস, প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা ও অধ্যাপনা শেষে অবসর নিলেও রোগীরা দেননি ছুটি। প্রতিদিন তাই চেম্বারের সামনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় থাকেন তারা। এই চিকিৎসকের কাছে হাতে-কলমে শিখে দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে আছেন অনেক গাইনোকোলজিস্ট। তাঁরা যখন ডা. রজত কুমার বিশ্বাসের প্রেসক্রিপশন দেখেন, তখন দ্রুত রোগ নির্ণয় কিংবা ওষুধ নির্বাচনের বিষয় দেখে নতুন কোনও পরামর্শ দেওয়ার সাহস পান না।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেবা প্রত্যাশীদের প্রশ্ন-কিভাবে তাঁকে রোগী দেখানোর সিরিয়াল মিলবে? যে ৪টি প্রতিষ্ঠানে রোগী দেখেন, অপারেশন করেন-সেখানকার নির্দিষ্ট নাম্বারে নির্ধারিত সময়ে ফোন করেও যে নাম ওঠানো যায় না। এ প্রশ্নের উত্তর জানার পর পাল্টা প্রশ্ন করার সুযোগ নেই। ডা. রজত কুমার বিশ্বাস বললেন-‘পেশাটাই এমন। ওটিতে রোগীর জীবন বাঁচাতে কেটে যায় বেলা। নড়বড় হয়ে যায় অপেক্ষমাণ রোগী দেখার সময়। নিজের সময়মতো ঘুম-খাওয়া দাওয়ার সুযোগও মিলে না’।

চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার পূর্ব গোমদন্ডী ৪ নম্বর ওয়ার্ড দত্ত পাড়ার শিক্ষানুরাগী প্রয়াত মনোরঞ্জন বিশ্বাসের পাঁচ পুত্র, চার কন্যার মধ্যে ডা. রজত প্রথম সন্তান। শৈশব থেকেই ছিলেন মেধাবী। প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বরাবরই ছিলেন প্রথম। উচ্চ মাধ্যমিকেও ছিল মেধার স্বাক্ষর। কধুরখীল উচ্চ বিদ্যালয়ের সেই কৃতি ছাত্রের কথা এখনও উঠে আসে ক্লাসরুমে, সামাজিক অনুষ্ঠানে, পাড়ার আড্ডায়।

সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস এর পাঠ চুকিয়ে বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস (বিসিপিএস) থেকে নিয়েছেন এফসিপিএস ডিগ্রি। হয়েছেন ইনফার্টিলিটি বিশেষজ্ঞ। ২০২১ সালে তিনি অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান। দক্ষতা আছে ল্যাপারোস্কোপি, টিভিএস সহ গাইনোকোলজির জটিল পরীক্ষা-নিরীক্ষায়। এখন নিয়মিত চেম্বার করেন পাঁচলাইশ শিশু ও জেনারেল হাসপাতাল, বেলভিউ হাসপাতাল, ইনোভা হাসপাতাল ও মেট্রো ডায়াগনস্টিক সেন্টারে।

মা ও শিশুস্বাস্থ্য, প্রজনন স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা সেবা, গবেষণা ও চিকিৎসকদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা পালনকারী প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের সংগঠন অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ (ওজিএসবি) চট্টগ্রাম শাখার সঙ্গে যুক্ত থেকে তিনি দিয়ে যাচ্ছেন পরামর্শ।

এলাকার সন্তান সুব্রত দত্ত রাজু জানালেন, জন্মস্থান পূর্ব গোমদন্ডী হেমপংকজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভূমিদাতা ডা. রজত কুমার বিশ্বাস। দত্তপাড়ায় একটি সড়ক তাঁর নামে নামকরণ করা হয়েছে। সড়কের প্রবেশমুখে বসবে এই গুণীজনের প্রতিকৃতি।

দত্তপাড়া সুহৃদ ক্লাবের সভাপতি প্রভাস চক্রবর্ত্তী বলেন, তাঁর অন্যান্য গুণের মধ্যে আছে ধৈর্য্য এবং পরিশ্রম। বিপদে-আপদে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন সাধারণ মানুষের কাছে।

‘হাসপাতাল-চেম্বার-ওটি’ তিনের বৃত্তে থেকে একঘেয়েমি দূর হয় কি করে? এ প্রশ্নে ডা. রজত কুমার বিশ্বাস গাইলেন দুটো লাইন-‘ক্লান্তি আমার ক্ষমা করো প্রভু…’। রবীন্দ্র সঙ্গীত ভালোবাসেন, তাই সুযোগ পেলেই হাতে তুলে নেন হারমোনিয়াম। জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ্, চট্টগ্রাম শাখার সহ-সভাপতি তিনি। ২০১৮ সালের ১১ জুন মা মিনতি প্রভা বিশ্বাসকে হারানোর পর শোকব্যথা ভুলতে এই গানেই তিনি খুঁজে নেন সান্ত্বনা।

শুধু স্বামী নন, স্ত্রী নিউরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. শিউলী মজুমদারও দারুণ ব্যস্ত তাঁর পেশায়। ছেলে শাশ্বত বিশ্বাস চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট ইংলিশ স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী এবং উচ্চাঙ্গ সংগীতে অনুরক্ত। বোন জামাই অধ্যাপক ডা. পঞ্চানন দাশ, ডা. প্রতীক সেন, ভাগনি ডা. একা সরকার, ডা. প্রান্ত সরকারও হেঁটেছেন তাঁর দেখানো পথে।

ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথ ও আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবির) গবেষণা বলছে, এমবিবিএস পাস করা ৯১ শতাংশ নারী চিকিৎসক স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যায় উচ্চতর ডিগ্রি নিতে আগ্রহী। বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলে (বিএমডিসি) নিবন্ধিত চিকিৎসকদের মধ্যে ৩৪ হাজার ৬৯৭ জনের তথ্য বিশ্লেষণ করে গবেষকেরা দেখেছেন, নারী চিকিৎসকদের ৯৬ শতাংশের বিশেষ দক্ষতা স্ত্রী ও প্রসূতি রোগ বিষয়ে। সেক্ষেত্রে পুরুষের সংখ্যা কম।

এমন প্রেক্ষাপটে পুরুষ চিকিৎসক হিসেবে স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যায় ক্যারিয়ার গড়ার ভাবনা কিভাবে এলো-এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. রজত কুমার বিশ্বাস স্মরণ করেন দেশে স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যার কিংবদন্তিতুল্য চিকিৎসক প্রয়াত অধ্যাপক এ এইচ এম তৌহিদুল আনোয়ার চৌধুরী (টি এ চৌধুরী), প্রফেসর ডা. এম এ তাহের খান, ডা. জোহরা বেগম কাজী, জাতীয় অধ্যাপক ডা. শায়লা খাতুন, অধ্যাপিকা ডা. সৈয়দা নুরজাহান ভূঁইয়ার মতো গুণী চিকিৎসকদের।

তিনি বলেন, একলাম্পশিয়া ও প্রসব পরবর্তী রক্তক্ষরণ মাতৃমৃত্যুর বড় কারণ। পাশাপাশি বন্ধ্যাত্ব নিয়ে একতরফা নারীদেরই নিগ্রহের শিকার হতে হয় বেশি। বিষয়টা চ্যালেঞ্জিং হলেও এটাকে গবেষণার বিষয় হিসেবে বেছে নিয়ে কাজ শুরু করি। একজন চিকিৎসকের কাছে রোগীকে সঠিক চিকিৎসা দেওয়াই প্রধান কাজ। এখানে রোগী পুরুষ নাকি নারী-সেটা বিবেচ্য নয়। এখন নারীরা প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে অনেক সচেতন।

অধ্যাপক ডা. রজত কুমার বিশ্বাসের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা, পেশাদারিত্ব এবং মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি তাঁকে চট্টগ্রামের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে-এ কথা জানালেন গাইনি চিকিৎসকরাই।