ব্যাংকে রাখা গুলশানের বিপুল পরিমাণ আমানত এক বছরে নাই হয়ে গেছে। করোনাকালে মানুষের আয় কমে যাওয়ায় আমানত তুলে খরচ করেছেন, নাকি গুলশান এলাকা থেকে তুলে অন্য কোথাও পাঠিয়েছেন- এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে তথ্য নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনেই এমন চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
তথ্যানুযায়ী, ২০২০ সালের মার্চে শুলশান এলাকার ব্যাংকগুলোতে আমানতের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৭৯ হাজার ৪১১ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। যা সারা দেশের মোট আমানতের ১৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
এক বছর পর ২০২১ সালের একই সময়ে আমানত কমে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৫০ হাজার ৬১৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। যা সারা দেশের মোট আমানতের ১০ দশমিক ৮৮ শতাংশ। এক বছরে আমানত কমেছে ২৮ হাজার ৭৯৪ কোটি ৮২ লাখ টাকা।
একই সঙ্গে সারা দেশের মোট আমানতের শেয়ার কমেছে প্রায় ৭ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, রাজধানীতে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ আমানত বেড়েছে। সে হিসাবে ২০২১ সালের মার্চ মাসে গুলশানের গ্রাহকদের আমানতের পরিমাণ ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে হওয়ার কথা ২ লাখ ১ হাজার ৩৮৮ কোটি টাকা। কিন্তু বৃদ্ধি না পেয়ে আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে আরও কমেছে।
একই সঙ্গে কমেছে পরিমাণ ও দেশের মোট আমানতে গুলশানের শেয়ার। কেন গুলশানের ব্যাংকগুলোতে মানুষের আমানত কমে গেল বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে এ ব্যাখ্যা নেই। তবে এ তথ্য পর্যালোচনা করবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
করোনার কারণে রপ্তানি আয় হ্রাস পাওয়া ও ব্যবসা-বাণিজ্যে মুনাফা কমে যাওয়ার কারণে গুলশানের আমানত কমে যেতে পারে বলে মনে করেন পিআরআই-এর নির্বাহী পরিচালক ও বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহসান এইচ মনসুর।
তিনি বলেন, করোনাকালীন ব্যবসা-বাণিজ্যে ধাক্কা লেগেছে। চলছে অনেকটা জোড়া-তালি দিয়ে। রপ্তানি আয় কমেছে। এর প্রভাব পড়েছে মুনাফায়। আর মুনাফা কমে যাওয়ার কারণে আমানত কমেছে। যদি প্রণোদনার কথা বিবেচনা করা হয়, তা পুরোটাই গুলশানের বাইরে। বা গুলশানের অ্যাকাউন্টধারীরা পেলেও তা চলে যাচ্ছে ঢাকার বাইরে কারখানা এলাকাগুলোতে।
এ ছাড়া করোনার মধ্যে রেমিট্যান্স বেড়ে গেলেও তা চলে যাচ্ছে ঢাকার বাইরে পল্লী এলাকায়। এ কারণে গুলশানের আমানত কমেছে।